মাস পাঁচেক ধরে তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতের প্রধান এবং উপপ্রধানের দ্বন্দ্বের জেরে গ্রামোন্নয়নের কোনও কাজই হয়নি বলে অভিযোগ। প্রতীকী ছবি।
বেজায় খেপেছেন বিনোদ মালিক, শঙ্কর রায়, ইমানুল হকরা।
এলাকায় রাস্তা হয়নি। আলো জ্বলেনি। পানীয় জলের সঙ্কট মেটেনি। পঞ্চায়েত ভোটের পরে এক বছর পেরোতে চলল। ফের ‘উন্নয়ন’-এর নামে তৃণমূল নেতাকর্মীরা লোকসভা ভোটের প্রচারে দেওয়াল-লিখনের জন্য আসতেই বারদুয়েক খেদিয়ে দিয়েছেন হুগলির পুরশুড়া ব্লকের পুরশুড়া-১ পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা বিনোদ, শঙ্কররা। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল পঞ্চায়েত ভোটে ঝুড়ি ঝুড়ি প্রতিশ্রুতি দিল। কিচ্ছু হল না। তাই এ বার প্রচারে বাড়ির দেওয়াল ব্যবহার করতে দিতে আমাদের আপত্তি রয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা এককাট্টা।’’
মাস পাঁচেক ধরে তৃণমূল পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতের প্রধান এবং উপপ্রধানের দ্বন্দ্বের জেরে গ্রামোন্নয়নের কোনও কাজই হয়নি বলে অভিযোগ। পুরশুড়ার বিডিও অচিন্ত্য ঘোষও বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতটির অচলাবস্থার কথা জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন যেমন সিদ্ধান্ত নেবে, সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।” পুরশুড়া বিধানসভা কেন্দ্রটি আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অপরূপা পোদ্দার। তিনি বলেন, ‘‘সমস্যার কথা জানি না। থাকলে নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে মেটাব।’’
ওই পঞ্চায়েতে দেওয়াল-লিখনের কাজ করতে গিয়েও ফিরে গিয়েছেন উপপ্রধান শেখ রিয়াজুল মমতাজ ওরফে বাদশা। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের বোঝানোর চেষ্টা করছি।’’ তবে তাঁর এক অনুগামী বলেন, ‘‘প্রতিশ্রুতি রক্ষা হয়নি। তাই ভোট চাইতে যাওয়ার মুখ নেই।’’
উপপ্রধানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছেন প্রধান সমীরকুমার দাস। পুলিশি নিরাপত্তায় মাঝেমধ্যে পঞ্চায়েতে হাজিরা দিয়েই তিনি চলে যাচ্ছেন। প্রধানের কথায়, ‘‘আমাকে কাঠপুতুল বানিয়ে উপপ্রধান পঞ্চায়েত চালাতে চান। আপত্তি জানানোয় খুনের হুমকি দিচ্ছেন। মারধরও করা হয়েছে। প্রশাসন এবং দলকে জানিয়ে লাভ হয়নি।’’ অভিযোগ উড়িয়ে উপপ্রধানের প্রশ্ন, ‘‘আমি কি ডাকাত যে প্রধান ভয় পাচ্ছেন? শুরু থেকেই বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির চেষ্টা রুখে দিয়েছি। তাই প্রধান পঞ্চায়েতটিকে ইচ্ছা করে অচল করে রেখেছেন।’’
ওই পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পটি বিক্ষিপ্ত ভাবে হলেও আইএসজিপি (পঞ্চায়েতের প্রাতিষ্ঠানিক সশক্তিকরণ প্রকল্প)-র কাজ আটকে রয়েছে। খরচ হয়নি চতুর্দশ ও পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের তহবিল। পরিষেবামূলক কাজেও গতি নেই। সমস্যা দলের জেলা নেতৃত্ব দেখছেন বলে জানিয়েছেন পুরশুড়ার তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক পারভেজ রহমান।