মঞ্চে তখন অমিত শাহ। মঙ্গলবার ঘাটালের বিদ্যাসাগর স্কুল মাঠে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
ভিড় জমল না বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের ঘাটালের সভায়।
কেশিয়াড়িতে তুলনায় জমায়েত ছিল বেশি। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের বহুক্ষণ পরে অমিত পৌঁছে যখন বলতে শুরু করলেন, তখন অনেকেই সভাস্থল ছাড়তে শুরু করেছেন।
কেন মঙ্গলবার অমিতের সভায় লোক হল না? ব্যাখ্যা দিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, দুপুর ১১টায় চড়া রোদ ছিল। তাই মানুষ বেরোতে পারেনি। তা ছাড়া অমিতের ঘাটালের সভা চূড়ান্ত হয়েছে ৪৮ ঘণ্টা আগে। প্রচারের সময় না মেলায় লোক কম হয়েছে। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও গেরুয়া শিবিরের অন্দরের খবর, এ দিন ঘাটালের বিদ্যাসাগরের হাইস্কুল মাঠে অমিতের সভায় সাকুল্যে লোক হয়েছিল প্রায় আড়াই হাজার। বিষয়টি নজর এড়ায়নি শাহেরও। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি ঘাটালে আসার আগে কয়েকজন সাংবাদিক বলেছিলেন এখানের সভা ফ্লপ হবে। আমি বলেছিলাম ৩০ জন লোক হলেও যাব।”
ঘাটালের সভা শেষ করে অমিত পৌঁছন কেশিয়াড়ি। সেখানকার কলাবনি ফুটবল মাঠে অবশ্য রোদ উপেক্ষা করেই অনেকে জড়ো হয়েছিলেন। নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে দুপুর ২টো নাগাদ পৌঁছন অমিত। তিনি পৌঁছনোর আগেই গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন বিজেপির এক কর্মী। বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুরের প্রার্থী দিলীপ ঘোষ তা মঞ্চ থেকে ঘোষণা করার পরই ভিড় পাতলা হতে শুরু করে। অমিতকেও বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনারা রোজে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেছেন। ১৫ মিনিটেই সভা শেষ করব।’’
অমিতের ফাঁকা সভা নিয়ে কটাক্ষ করে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “বিজেপি ক’টা ভোট পাবে এ দিনের সভার লোকজনের উপস্থিতি দেখলেই বোঝা যাবে। ওরা চড়া রোদের বাহানা দিচ্ছে। আমাদের নেত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাও কিন্তু চড়া রোদেই হচ্ছে।” যদিও বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “চড়া রোদ। বহু মানুষ রাস্তায় আসছিলেন। একেবারে লোক কম লোকও তো হয়নি।” পাশের জেলা বাঁকুড়ার রামসাগরে শাহের তৃতীয় সভায় অবশ্য লোক ভালই ছিল। বিকেল তিনটে নাগাদ রোদ উপেক্ষা করেই বহু মানুষ এসেছিলেন।
সভায় অমিত ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলেছেন পুরনো কথা। তুলেছেন সিন্ডিকেট, এনআরসি প্রসঙ্গ। কেশিয়াড়ির সভায় অমিত দাবি করেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত লোকসভার যে নির্বাচন হয়েছে, তাতেও বাংলার মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি মমতাদি। কান খুলে শুনে নিন মমতাদি, যে সংখ্যক লোক ভোটদান করবে তাতেও আপনি হেরে যাবেন।’’ ঘাটালের সভায় দলীয় প্রার্থী ভারতী ঘোষের সমর্থনে বলতে গিয়ে অমিতের মন্তব্য, ‘‘মমতাদির আমাদের বোন ভারতী ঘোষের উপর একটু বেশি ভালবাসা আছে। কারণ, ভারতী মমতাদির বেআইনি নির্দেশ গুরুত্ব দেননি।’’ পাল্টা বিঁধে জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত বলেন, “ভারতী পুলিশে থাকাকালীন খারাপ কাজ করেছিলেন বলেই তাঁকে সরিয়ে দিয়েছেন মমতা। আর সেই ফেরার অসামিকে ঠাঁই দিয়েছেন মোদী, অমিত শাহেরা।”