সিদ্ধার্থ নস্কর।
নির্বাচন কমিশনের তরফে ভোটের নির্ঘণ্ট জানানোর পর তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল ও বামফ্রন্ট প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে আগেই। বৃহস্পতিবার হোলির দিন সন্ধ্যায় বিজেপি প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হচ্ছেন সিদ্ধার্থ নস্কর। দলীয় সূত্রে খবর, নদিয়ার নবদ্বীপের বাসিন্দা সিদ্ধার্থবাবু অল ইন্ডিয়া কীর্তন, বাউল অ্যান্ড ডিভোশনাল সিঙ্গারস ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট শিল্পী সংসদের কর্ণধার। কিন্তু তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হিসাবে সিদ্ধার্থবাবুর নাম জানার পরেই ক্ষোভ দেখা দিয়েছে জেলার বিজেপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
বিজেপি’র তমলুক সাংগঠনিক জেলা নেতারা সিদ্ধার্থবাবুকে তাঁদের কাছে অপরিচিত বলে দাবি করে ওই প্রার্থী পরিবর্তন করে জেলার বা রাজ্যের একজন পরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিকে প্রার্থী করার জন্য রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে দরবার করবেন বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার তমলুকে দলের জেলা কার্যালয়ে এক বৈঠক করে জেলা নেতৃত্ব-সহ দলের সাংগঠনিক ব্লক সভাপতিরা তাঁদের ক্ষোভের কথা জানান। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, প্রার্থী পরিবর্তনের জন্য রাজ্য সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চিঠি পাঠানো হবে
বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি প্রদীপ দাস বলেন, ‘‘আমরা প্রার্থী নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারিনি। এই বিষয়ে ব্লক স্তর সহ স্থানীয় নেতৃত্বও তাঁদের অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। আমরা বিষয়টি বিবেচনা করে এখানে জেলা বা রাজ্যের একজন পরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে প্রার্থী করার জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে আবেদন জানাব।’’
অল ইন্ডিয়া কীর্তন বাউল অ্যান্ড ডিভোশনাল সিঙ্গার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট (শিল্পী সংসদ)-এর সর্বভারতীয় সভাপতি সিদ্ধার্থবাবু আদতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিঙের বাসিন্দা। বছর ছেচল্লিশের সিদ্ধার্থবাবু দীর্ঘদিন ধরে নবদ্বীপের বাসিন্দা। নিজেকে একজন কীর্তনিয়া হিসেবে পরিচয় দিতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করেন সিদ্ধার্থবাবু। জানালেন, দীর্ঘ ৩৫বছর ধরে কীর্তন গান করছেন। শ্রীচৈতন্য টিভি সিরিয়ালে শ্রীকৃষ্ণ চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন। বছর চারেক আগে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।
সিদ্ধার্থবাবুর দাবি, পশ্চিমবঙ্গে ২ কোটি কীর্তন শিল্পী রয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ২ লক্ষ কীর্তন শিল্পী রয়েছেন। তমলুকে অপরিচিত মুখ বলে বিজেপি জেলা নেতাদের একাংশ তাঁর প্রার্থীপদ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন জেনে সিদ্ধার্থবাবু বলেন, ‘‘আমি তমলুকের মানুষের কাছে অপরিচিত মুখ নই। দীর্ঘদিন ধরে তমলুক সহ পূর্ব মেদিনীপুরের নানা জায়গায় কীর্তন গান করছি।’’
আগামী রবিবার থেকেই তমলুকে প্রচার শুরু কর বের জানিয়ে সিদ্ধার্থবাবু বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে তমলুকের মতো ঐতিহ্যবাহী এলাকায় উন্নয়নের কাজ করতে চাই।’’