বাঁশবাগানের মাথায় উড়ছে অকাল-লক্ষ্মী

নবাবের জেলায় বাঁশবাগানের অভাব নেই। বাঁশের চাহিদাও ভাল।

Advertisement

মৃন্ময় সরকার

লালবাগ শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৩১
Share:

এ বার ভোটের নতুন চমক কি তবে বাঁশ?

কথায় আছে, বাঁশের থেকে কঞ্চি দড়! কিন্তু ভোটের হাওয়া জানান দিচ্ছে, সে কথা স্রেফ কথার কথা। লক্ষ্মীলাভ হচ্ছে ভোটের-বাঁশেই। কঞ্চি সেখানে নেহাত খুচরো স্যাঙাত!

Advertisement

নবাবের জেলায় বাঁশবাগানের অভাব নেই। বাঁশের চাহিদাও ভাল। ব্যবসায়ীদের কথায়, ‘‘পুজো-পরব-বিয়ে-শাদি ছাড়া অন্য সময় বাজার একটু ‘ডাল’ থাকে। তবে এ বারে ভোটের ডাল ধরে অসময়েও দেদার করে বিকোচ্ছে বাঁশ ও কঞ্চি।’’

গত পঞ্চায়েত ভোটে বাঁশবাগানের মাথায় চাঁদ ওঠার আগেই রাজনীতির অতিসক্রিয় বেশ কিছু কর্মীর হাতে উঠেছিল কোদালের হাতল ও উইকেট। সে সবের কাটতির বহর দেখে বহু ব্যবসায়ী মহাজনকে বলেছিলেন, ‘‘শিগ্‌গির আরও উইকেট ও কোদালের হাতল পাঠান।’’ নিন্দুকদের অভিযোগ, ভোটের নামে সে বার জমে উঠেছিল ‘চাষ ও খেলা’।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এ বার ভোটের নতুন চমক কি তবে বাঁশ? জিয়াগঞ্জ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস সরকার হাসছেন, ‘‘কী যে বলেন! ফ্লেক্স, ফেস্টুন টাঙানো কিংবা মঞ্চ, প্যান্ডেল বাঁধা কি বাঁশ ছাড়া হবে? মিছিলে ছোট ছোট দলীয় পতাকার জন্য কঞ্চিও লাগছে।’’

ব্যস! চাহিদা বুঝে এখন দামও হাঁকছেন বাঁশ-কারবারিরা। দেবাশিস বলছেন, ‘‘ভোট আসতে না আসতেই এক লাফে বাঁশের দাম দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। দেড়শো টাকার বাঁশ কিনতে হচ্ছে তিনশো টাকায়।’’

লালবাগে সিপিএমের এক নেতা মিলন সরকারের কথায়, ‘‘পতাকা, ব্যানার লাগানোর জন্য বাঁশ ও কঞ্চি তো লাগছেই। বাঁশের দাম তো বেড়েইছে। এ বারে ফাউ কঞ্চিও টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে! এক বান্ডিল (চল্লিশটা) কঞ্চির দাম দু’শো টাকা।’’

ভগবানগোলার যদু মণ্ডল বংশ পরম্পরায় বাঁশের চাষ করেন। তিনি বলছেন, ‘‘লোকে বাঁশ নেবে টাকা দিয়ে। কিন্তু কঞ্চির বেলায় কেউ দাম দিতে চায় না। কঞ্চি কি ফেলনা? এ বার, স্পষ্ট বলে দিচ্ছি, দাম দু’টোরই দিতে হবে। নইলে বেচব না।’’

রানিতলার এক বাগান মালিক আক্তার শেখ বলছেন, ‘‘এ বারে দিল্লির ভোট আমাদের ভাল ব্যবসা দিচ্ছে। সব রাজনৈতিক দলেরই বাঁশ-কঞ্চির দরকার। নেতা-কর্মীদের কেউ ফোন করছেন, কেউ আবার বাগানে এসে দর-দাম করে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।’’

বাঁশ কেনাতে এগিয়ে কারা?

ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, প্রথমেই তৃণমূল। তার পরে সিপিএম, বিজেপি। তবে কংগ্রেস এখনও পিছিয়ে।

যা শুনে বিরোধীদের টিপ্পনী, ‘‘তৃণমূলের তো এগিয়ে থাকারই কথা। মনে রাখতে হবে, বাঁশও কিন্তু এক প্রকার তৃণই!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন