‘মানস ভূমে’ কৌশলী ভারতী

সোমবার সবংয়েই প্রচারে সারেন ভারতী। পিংলার এগারোমাইল ছুঁয়ে সবং পৌঁছন তিনি। বলপাই থেকে শুরু করেন প্রচার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সবং শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৯ ০০:৩০
Share:

পংক্তিভোজে ভারতী। সবংয়ের পানপাড়ায়।

তখন একজন কংগ্রেস বিধায়ক, অন্যজন জেলার পুলিশ সুপার। সমীকরণ পাল্টে দু’জনেই এখন ভোট-প্রার্থী। তবে দ্বৈরথের মঞ্চেই থেকে গিয়েছেন মানস ভুঁইয়া আর ভারতী ঘোষ।

Advertisement

মানস এ বার মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী। তাঁর খাসতালুক সবং অবশ্য মেদিনীপুর লোকসভায় পড়ে না। পড়ে ঘাটাল লোকসভায়। আর সেখানে বিজেপি-র প্রার্থী ভারতী।

সোমবার সবংয়েই প্রচার সারেন ভারতী। পিংলার এগারোমাইল ছুঁয়ে সবং পৌঁছন তিনি। বলপাই থেকে শুরু করেন প্রচার। পানপাড়ার এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গিয়ে কলাপাতায় প‌ংক্তিভোজে যোগ দেন প্রাক্তন পুলিশ সুপার। তারপর দিনভর রইনান, হান্নান-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা চষে বেড়ান। পরে সাংবাদিকদের ভারতী বলেন, ‘‘ভাল সাড়া পাচ্ছি। মানুষ বলছেন কী ভাবে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রতি রাতে ওরা (তৃণমূল) শাসাচ্ছে।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বছর তিনেক আগেও সবংয়ে ছাত্র হত্যা থেকে তৃণমূলকর্মী খুন, নানা ঘটনায় মানস-ভারতী সংঘাত চরমে ছিল। পরে কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়ে রাজ্যসভার সাংসদ হন সবংয়ের ভূমিপুত্র মানস। আর তাঁর স্ত্রী গীতা ভুঁইয়া এখন সবংয়ের বিধায়ক। সবংয়ের তৃণমূল ইতিমধ্যে পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রচার শুরু করেছে। রবিবারই সবংয়ে তৃণমূল প্রার্থী দেবের প্রচার সভা কার্যত বদলে গিয়েছিল ভারতী বিরোধী সভায়। দেব সৌজন্য বজায় রাখলেও ভারতীর বিরুদ্ধে পুরনো সব অভিযোগ তুলে ধরে সরব হয়েছেন মানস, অজিত মাইতিরা। ভারতী অবশ্য এ সবে গুরুত্ব না দিয়ে বলছেন, ‘‘ওরা আমাকে আক্রমণ না করে পাঁচ বছর কাজ করলে কাজ হত।’’ আর মানস?

তাঁকে অবশ্য অন্তত প্রকাশ্যে কোনও গুরুত্বই দিতে নারাজ ভারতী। তাঁর জবাব, ‘‘কে মানস ভুঁইয়া! সবংয়ে ওঁর কী গুরুত্ব রয়েছে জানি না। তবে আমার কাছে কোনও গুরুত্ব নেই। সবংয়ে মানুষ তাঁর পরিবারতন্ত্র দেখছে। তাঁর স্ত্রী বিধায়ক হয়েছেন। আবার গত বিধানসভা নির্বাচনে সূর্যকান্ত মিশ্রের সঙ্গে হাত ধরাধরির ছবি মানুষ দেখেছে। সবংয়ের মানুষ এ বার এ সবের জবাব দেবেন। আর মানস ভুঁইয়া নিজেও হারবেন।’’

ব্যক্তি আক্রমণে যাননি মানসও। ভারতী প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে প্রবীণ এই রাজনীতিকের বক্তব্য, ‘‘কোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে মন্তব্য করব না। আমি ১৯৮০ সাল থেকে সবংয়ে রাজনীতি করছি, বিধায়ক হয়েছি। মানুষের ভোটেই বিধায়ক হয়েছেন গীতা ভুঁইয়া। সবংয়ের মানুষ আমাকে চেনেন। মানুষই বিচার করবেন।’’
এ দিন সবংয়ের মাটিতে কোনও সভা বা মিছিল করেননি ভারতী। মানস-ভূমে দিনভর বাড়ি বাড়ি প্রচার সেরেছেন তিনি। সবংয়ের বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভারতীকে সামনে পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিজেদের বঞ্চনার কথা জানিয়েছেন। যাতে নির্ভয়ে ভোটটুকু দিতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছেন। সবংয়ের বলপাইয়ের পানিথরের বাসিন্দা সুজাতা বেরা, মদন সামন্তরা বলেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটের আগের দিন থেকে ভয় দেখিয়েছিল। ভোট দিতে পারিনি। এ বার সুষ্ঠুভাবে ভোট হলে ফল ঘুরবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন