সুকান্তকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন পলাশের মা। তপনে। নিজস্ব চিত্র
বিজেপি প্রার্থী সুকান্তকে দেখে চোখের জল বাঁধ মানছিল না নিহত জওয়ানের মা বৃদ্ধা শেফালিদেবীর। দু’বছর আগে ছেলেকে হারানোর ব্যাথা যেন নতুন করে উঠে এল তার চোখে। পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিলেন সুকান্ত। ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই বিহারের গয়াতে মাওবাদী হামলায় নিহত হন তপনের সালাস গ্রামের বাসিন্দা, কোবরা বাহিনীর জওয়ান পলাশ মণ্ডল (২৮)। নিহত জওয়ানের প্রাপ্যটুকু ছাড়া কেন্দ্রের তরফে আর কোনও সহায়তা মেলেনি বলে অভিযোগ।
বুধবার দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানার সালাস গ্রামে প্রচারে গিয়ে বালুরঘাটের বিজেপি প্রার্থী জানতে পারেন মাওবাদী হামলায় নিহত সিআরপিএফ জওয়ান পলাশ মণ্ডলের বাড়ি কাছেই। সুকান্তের কথায়, ‘‘প্রচার নয়, শহিদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে চলে আসি।’’ পলাশের পূর্ণাবয়ব মূর্তিতে মালা দিয়ে প্রণাম করেন বিজেপি প্রার্থী।
২০১৭ সালের ৩ মে এ জেলার বংশীহারির সভামঞ্চ থেকে পলাশের দুঃস্থ মায়ের হাতে মুখ্যমন্ত্রী এক লক্ষ টাকার চেকও তুলে দেন। পরিবারের দুর্দশা কাটাতে নিহত পলাশের বেকার দাদা তরুণকে চাকরি দেবেন বলেও আশ্বাস দেন মমতা। সেই মতো পিএইচই দফতরে জল সরবরাহ প্রকল্পে দু’বছরের জন্য মাসে ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে তরুণ চাকরি পান। ওই চাকরির চুক্তি চলতি বছরের জুনে শেষ হচ্ছে। ফলে দুশ্চিন্তা গ্রাস করেছে ওই পরিবারে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তপন-বালুরঘাট রাজ্য সড়কের পাশে মাটির ঘরের সঙ্গে নির্মীয়মান দালানে বসে তরুণ জানান, লেখাপড়ায় মেধাবী পলাশের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দেওয়ার আগেই ২০১০ সালের শেষের দিকে সিআরপিএফে চাকরি হয়। সামান্য কৃষিজমির উপর দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তাঁদের টানাটানির সংসার। ছোট ছেলের চাকরি পাওয়ায় সকলে আশ্বস্ত হন। অবিবাহিত পলাশের পাঠানো টাকায় ধীরে ধীরে সংসারের হাল ফিরছিল। মেজ বোন শ্যামলীদেবীকে বিয়ে দিয়ে বড়দা তরুণকে বিয়ের উদ্যোগ নেন পলাশ। তৈরি হচ্ছিল একটি পাকা ঘর।
আর মাত্র দু’মাস পরে তরুণের ওই অস্থায়ী চাকরির কি হবে, আশ্বাস দিতে পারেননি বিজেপি নেতারা। প্রার্থী সুকান্ত জানান, এ দিন শোকের আবহে তিনি বিহ্বল হয়ে পড়েন। পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে চলে আসেন বালুরঘাটের ওই বিজেপি প্রার্থী।