দখল: নয়াগ্রামে বিজেপির দেওয়াল লিখন। নিজস্ব চিত্র
গত পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রামে ভাল ফল করেছিল বিজেপি। তারপর ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনকে পাখির চোখ করেছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু লোকসভার প্রচারের প্রথম রাউন্ডে কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে তারা। কারণ ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের এক সপ্তাহ পরেও রাজ্যের কোনও আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিজেপি। অন্য দিকে, ঝাড়গ্রাম আসনে মহিলা আদিবাসী মুখকে প্রার্থী করে পুরোদস্তুর প্রচারে নেমে গিয়েছে তৃণমূল। বিজেপি কর্মীরা আপাতত প্রার্থীর নামের জায়গা ফাঁকা রেখেই বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়ে দেওয়াল লিখছেন।
তৃণমূলের প্রার্থী বিরবাহা সরেন জঙ্গলমহলের ভূমিকন্যা। পেশায় শিক্ষিকা বিরবাহা আদিবাসীদের সামাজিক সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের নেতা রবিন টুডুর স্ত্রী। বিরবাহা এখন কর্মিসভা করছেন। কখনও আদিবাসীদের ‘জাহের থান’-এ (সাঁওতালদের ধর্মীয় স্থান) গিয়ে প্রণাম করছেন, আবার কখনও মন্দিরে গিয়ে পুজো দিচ্ছেন। সেই তুলনায় অগোছালো অবস্থা বিজেপি-র। এই নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না তৃণমূল। ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের আহ্বায়ক উজ্জ্বল দত্ত বলছেন, ‘‘বিজেপি-র আছেটা কী? পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে ঝাড়খণ্ড থেকে দুষ্কৃতী নিয়ে এসে সন্ত্রাস করে কয়েকটা পঞ্চায়েত দখল করেছিল। ওদের দখলে থাকা পঞ্চায়েতগুলির কাজকর্মে এলাকাবাসী ইতিমধ্যেই বীতশ্রদ্ধ হয়ে গিয়েছেন। লোকসভা ভোটে বিরবাহা সরেন জিতছেনই। সেই সঙ্গে বিজেপি-র শোচনীয় হার হবে।’’
কে হবেন ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনে বিজেপি-র প্রার্থী? অরণ্য শহরের হাওয়ায় ভাসছে নানা নাম। বিজেপির একটি সূত্রে খবর, ভিন রাজ্যের এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে প্রার্থী করার জন্য দলীয় স্তরে আলোচনা হয়েছে। স্থানীয় এক অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারের নামও শোনা যাচ্ছে। খড়্গপুর আইআইটি-র প্রাক্তনী ওই নেতা এক সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ একটি সংস্থায় চাকরি করতেন। জেলা বিজেপি চাইছে, স্থানীয় কাউকে প্রার্থী করা হোক। কর্মীদের কেউ কেউ কৌতুক করে বলছেন, ‘হয় কপ্টার, নয় স্কুটার’! কারণ ভিন রাজ্যের নেতা প্রার্থী হলে তিনি কপ্টারে করে এলাকায় আসবেন, স্থানীয় কেউ প্রার্থী হলে তিনি স্কুটারে করে আসবেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, ‘‘আমাদের সব আসনেই নরেন্দ্র মোদীই প্রার্থী। দু’-একদিনের মধ্যেই দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রার্থী ঘোষণা করবেন। আমাদের প্রচার শুরু হয়েছে। আপাতত প্রার্থীর নাম ফাঁকা রেখে দেওয়াল লিখন হচ্ছে।’’ সুখময়ের দাবি, তৃণমূল সম্পর্কে মানুষের মোহভঙ্গ হয়ে গিয়েছে। প্রার্থী যখনই ঘোষণা হোক, তাতে কোনও সমস্যা হবে না।