নিশীথ প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র।
সকালেই এবিএন শীল কলেজের সামনে একটি ফেস্টুন দেখা গিয়েছিল। সেখানে লেখা ছিল, ‘দিনহাটার স্মাগলার নিশীথ প্রামাণিক বিজেপির প্রার্থী হলে একটিও ভোট নয়’। নোটা-য় ভোট দেওয়ার জন্যও আবেদন জানানো হয়েছিল। সন্ধ্যায় দিল্লি থেকে বিজেপি কোচবিহারের প্রার্থী হিসেবে নিশীথবাবুর নাম ঘোষণা করতেই সেই ফেস্টুন নিয়ে শুরু হয়ে গেল বিজেপ কর্মীদের একাংশের বিক্ষোভ।
দিনকয়েক ধরেই অপেক্ষায় বসেছিলেন বিজেপি কর্মীরা। দোলের দিন সকাল থেকে দলের দফতরে ভিড় জমছিল। সন্ধ্যায় দিল্লিতে বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময়ে বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা দলীয় দফতরেই ছিলেন। তাঁকে ঘিরেই বিক্ষোভ দেখানো হয়। দফতরের ভিতরে চলে ভাঙচুর।
বিক্ষোভের খবর পেয়েছেন নিশীথবাবুও। তিনি এখন দিল্লিতে। তাঁর আজ, শুক্রবার কোচবিহারে পৌঁছনোর কথা। দিল্লি থেকেই তিনি বলেন, ‘‘ঠিক কী হয়েছে, জানি না। তবে এটা সাময়িক ব্যাপার। সবাই একসংঙ্গে মিলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত শক্ত করাই আমাদের লক্ষ্য।’’ তাঁর বক্তব্য, তাঁর বিরুদ্ধে এখন অপপ্রচার চলবে। মিথ্যা মামলা দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা চলবে। কিন্তু তাঁর দাবি, ‘‘সব কিছুর জবাব মানুষই দেবেন।’’ জেলা বিজেপি সভানেত্রী মালতী জানান, তিনি বৈঠকে ব্যস্ত। দলের কোচবিহার জেলার প্রাক্তন সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মণ জানিয়েছেন, চিনি এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চান না।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
নিশীথবাবু যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর তাঁকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। তাঁর বিরুদ্ধে তখন তলায় তলায় বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগের অভিয়োগ ছিল। নিশীথবাবু তাঁর বাড়ির কাছে গণেশ পুজোয় কোটি টাকা খরচ করেছিলেন বলেও চর্চা ছিল। কুড়িটির বেশি গাড়ির ‘কনভয়’ নিয়ে জেলায় ঘুরে বেড়াতে দেখা যেত তাঁকে। তাঁর ব্যক্তিগত দেহরক্ষীও ছিল। তাঁর ওই বৈভবের উৎস কোথায়, তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। তৃণমূলে থাকার সময়েই তাঁকে নিয়ে সিবিআইয়ের নামে দেওয়া একটি চিঠি ‘ভাইরাল’ হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত নিশীথবাবুই প্রার্থী হওয়ায় তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি, ‘‘বিজেপি পাঁচ লক্ষের বেশি ভোটে হারবে!’’