মমতা ঠাকুরের নাম সুপারিশ করেন বড়মা, মুখ্যমন্ত্রী

রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, মৃত্যুর পরেও মতুয়া ভক্তদের কাছে বড়মার গ্রহণযোগ্যতার কথা জানে সব রাজনৈতিক দল। প্রচারে এসে সদ্য প্রয়াত বড়মার কথা সে কারণেই তুললেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাগদা শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৯ ০২:১৮
Share:

স্বরূপনগরের সভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বসিরহাটের প্রার্থী নুসরত জাহান। —ছবি: নির্মল বসু

প্রত্যাশিতই ছিল। বনগাঁ কেন্দ্রের জন্য প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মতুয়াদের বড়মার কথা তুললেন। আরও এক ধাপ এগিয়ে জানিয়ে দিলেন, বনগাঁর তৃণমূল প্রার্থী মমতা ঠাকুরের নাম সুপারিশ করে গিয়েছেন বড়মা নিজেই।

Advertisement

সোমবার বাগদার হেলেঞ্চায় সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘মমতা (বনগাঁর তৃণমূল প্রার্থী মমতা ঠাকুর) নিজেও অনেক লড়াই করেছেন। মনে রাখবেন, বড়মা ওঁর নাম নিজেই আমাকে রেকমেন্ড (সুপারিশ) করেছিলেন। সেই চিঠি আজও আমার কাছে রয়েছে। ওঁর স্বামীকেও (কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর) প্রার্থী করেছিলাম। ওঁর মৃত্যুর পরে বড়মার কথা মতো মমতাকে প্রার্থী করেছিলাম।’’

রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, মৃত্যুর পরেও মতুয়া ভক্তদের কাছে বড়মার গ্রহণযোগ্যতার কথা জানে সব রাজনৈতিক দল। প্রচারে এসে সদ্য প্রয়াত বড়মার কথা সে কারণেই তুললেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঠাকুরনগরে মতুয়াদের একটি ধর্মীয় সভায় যোগ দিয়েছিলেন। বড়মার মৃত্যুর পরে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে এসেছিলেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়। বিজেপি প্রার্থী করেছে, বড়মার নাতি, সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুরকে। সেই সূত্রে ইদানীং ঠাকুরবাড়িতে বিজেপি নেতা-নেত্রীদের আনাগোনা বেড়েছে। সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বিজেপির কড়া সমালোচনা করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘তিরিশ বছর আগে কোথায় ছিলেন? জিজ্ঞেস করুন, এত দিন ওঁরা কোথায় ছিলেন। বড়মা যতবার অসুস্থ হয়েছেন, আমি, আমরা ওঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। চিকিৎসার খবর নিয়েছি।’’ নাম না করে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘হঠাৎ তোমরা উড়ে এসে জুড়ে বসে মতুয়া-প্রীতি দেখাচ্ছ? কোনও দিন কেউ আসেনি। আমি একাই যেতাম। বালু (খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক) , মমতা ঠাকুররা আমাকে নিয়ে যেতেন। আমি যেতাম।’’

বনগাঁ লোকসভা আসনে জয়-পরাজয়ের ক্ষেত্রে মতুয়ারা নির্ণায়ক ভূমিকা নিয়ে থাকেন বলে রাজনৈতিক মহলের মত। ডান-বাম সব রাজনৈতিক দলই তাই ভোটের সময়ে মতুয়াদের কাছে টানতে তৎপর হয়। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন মতুয়াদের উন্নয়নে কী কী করেছেন, তার খতিয়ান তুলে ধরে বলেন, ‘‘হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের (মতুয়া ধর্মগুরু) নামে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে দিচ্ছি। যার একটি ক্যাম্পাস তৈরি হবে কৃষ্ণনগরে। প্রথমরঞ্জন ঠাকুরের নামে (বড়মার স্বামী) সরকারি কলেজ করেছি। মতুয়া উন্নয়ন বোর্ড তৈরি করেছি। ওঁরা সামাজিক কাজ করতে পারবেন। নমঃশূদ্র উন্নয়ন বোর্ড করেছি।’’

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘সব কাজ করে দিয়েছি। এমন কিছু নেই যা বাকি আছে।’’ বড়মার মৃত্যুর কিছু দিন আগে মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে এসে তাকে রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান বঙ্গবিভূষণেও ভূষিত করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন