দুই শহরে টহল শুরু বাহিনীর

শুক্রবার বিকেলে প্রথম পর্যায়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৮৪ জনের একটি দল আসানসোলে আসে। আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা জানান, দিন কয়েকের মধ্যে আরও কয়েক কোম্পানি বাহিনী আসবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯ ০৫:৫৩
Share:

কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল। বাঁ দিকে, আসানসোলে। ডান দিকে, দুর্গাপুরে। ছবি: পাপন চৌধুরী, বিকাশ মশান

দুই শহরে কেন্দ্রীয় বাহিনী পা রেখেছে শুক্রবার। শনিবার, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আসানসোল, দুর্গাপুরে রুট মার্চ শুরু করল কেন্দ্রীয় বাহিনী। জেলা প্রশাসন জানায়, স্পর্শকাতর এলাকাগুলি ছাড়াও সীমানা এলাকায় কড়া নজরদারি চালাবে বাহিনী। কোন কোন এলাকায় বাহিনীকে নিয়ে যাওয়া হবে তার রুট ম্যাপও তৈরি। আপাতত, একটি বা দু’টি নির্দিষ্ট জায়গায় বাহিনীর থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরে বুথের কাছাকাছি তাঁদের রাখা হবে।

Advertisement

শুক্রবার বিকেলে প্রথম পর্যায়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৮৪ জনের একটি দল আসানসোলে আসে। আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা জানান, দিন কয়েকের মধ্যে আরও কয়েক কোম্পানি বাহিনী আসবে। শনিবার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বাহিনীর সদস্যেরা টহল দিয়েছেন। সঙ্গে ছিলেন সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ অফিসারেরা। পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানায় বরাকর, রূপনারায়ণপুরেও বাহিনী টহল দিয়েছে। কমিশনারেটের পুলিশ আধিকারিকেরা জানান, এখন কেন্দ্রীয় বাহিনী এলাকার সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। তাঁরা এলাকা টহল দেওয়ায় নিরাপত্তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সাহসের সঞ্চার হচ্ছে।

কোথায় কোথায় বাহিনীর টহল দেওয়া দরকার, তা জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি। বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘প্রশাসনের কাছে কিছু স্পর্শকাতর এলাকার নাম জানিয়ে সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল দেওয়ার আবেদন করেছি। সীমানা এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর জন্য আর্জি জানিয়েছি।’’ ঝাড়খণ্ড সীমানায় বেশি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘সীমানা পেরিয়ে ভিন্-রাজ্যের দুষ্কৃতীরা শহরে ঢুকে গোলমাল করতে পারে। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে সীমানা ‘সিল’ করে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছি।’’ সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী অবশ্য দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে দিতে হবে। ফাঁকা জায়গায় বসিয়ে রাখলে কোনও লাভ হবে না। আমরা কিছু স্পর্শকাতর এলাকার নামের তালিকা প্রশাসনের কাছে জমা দেব।’’ তবে বাহিনীর মোতায়েন প্রসঙ্গে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘কমিশন যেমন যেমন নির্দেশ দেবে, সে ভাবেই কাজ করবে কেন্দ্রীয় বাহিনী।’’

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০০৯-র লোকসভা ভোটে আসানসোলের সেটে কন্যাপুর এলাকায় বুথের মধ্যেই বোমাবাজি করে দুষ্কৃতীরা। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় তৃণমূলের এক পোলিং এজেন্টের। ২০১৫-র আসানসোল পুরসভা ভোটে কাল্লা এলাকার দু’টি বুথে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় জনা কয়েক দুষ্কৃতী। ওই ঘটনায় গুরুতর জখম হন ভোটের লাইনে অপেক্ষারত তিন জন ভোটার। পুলিশকর্তারা জানান, অতীতের এই সব ঘটনা মনে রেখে সমস্ত স্পর্শকাতর অঞ্চলেই ধারাবাহিক টহল দেবে কেন্দ্রীয় বাহিনী।

শুক্রবার রাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছেছে দুর্গাপুরেও। দুর্গাপুরের তিনটি থানায় বাহিনীকে ভাগ করে পাঠানো হয়। শনিবার সকাল থেকে দুর্গাপুর থানা, নিউ টাউনশিপ থানা ও কোকআভেন থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় রুট মার্চ শুরু করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সকালে দুর্গাপুর থানার আমড়াই এলাকায় রুট মার্চের সময়ে বাহিনীর পুরোভাগে ছিলেন কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী ও অন্য পুলিশকর্তারা। আশপাশের বাড়ি থেকে বাসিন্দারা বেরিয়ে আসেন বাহিনীর টহল দেখতে। এ দিন কোকআভেন থানার সগড়ভাঙাতেও রুট মার্চ করে কেন্দ্রীয় বাহিনী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন