—ফাইল চিত্র।
লক্ষ্মীবারের সকাল। থলি হাতে কেউ বাজারের পথে, কেউ আবার সবে ঘুম থেকে উঠেছেন। আচমকাই চতুর্দিকে ঢাল-ঢোল, কাঁসরের শব্দ!
এখন আবার কোন পুজো? রাস্তায় উঁকি দিতেই জবাব পেয়ে গেলেন বালির বাসিন্দারা। ঢাক, মাদল নিয়ে প্রাক্তন কাউন্সিলর-সহ তৃণমূলের অনেক নেতানেত্রীকে নগরকীর্তন করতে দেখে আমজনতা বুঝতে পারল, এ হল ভোট-পুজোর বাজনা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সাঁওতালি নাচের ছন্দে পা মিলিয়ে অলিগলিতে ঘুরে বেড়ালেন হাওড়া সদর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। খেলার মাঠে ড্রিবলিং করে প্রতিপক্ষকে কাবু করে যে-ভাবে এগিয়ে যেতেন, অনেকটা সেই ছন্দেই কখনও হুডখোলা জিপে, কখনও হেঁটে বালিবাসীর সামনে হাজির হয়ে ভোট প্রার্থনা করলেন অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত ওই ফুটবলার। পথচলতি ভোটারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জানতে চাইলেন, ‘‘ভোট দেবেন তো আমায়?’’
সাতসকালে বেলুড় মঠ, কল্যাণেশ্বর শিবমন্দিরে পুজো সেরে খেলোয়াড়ের পোশাকে বালিখালে হাজির প্রসূন। প্রচারে সঙ্গী মন্ত্রী অরূপ রায়, বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। প্রসূন বললেন, ‘‘আমরা বোমা মারব না, গুলি করব না। দিলীপের (বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ) মতো বক্তৃতাও দেব না। শুধু দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)-র উন্নয়ন নিয়েই এগিয়ে চলব। বৃহস্পতিবার দিনটা শুভ। তাই এ দিন বালি দিয়েই রাস্তায় নেমে প্রচার শুরু করলাম।’’ মন্ত্রী অরূপবাবু বললেন, ‘‘এত দিন বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রে যে-সব বুথে হেরেছি বা মার্জিন খুবই কম ছিল, সেগুলো কী ভাবে মেরামত করা যায়, তা নিয়ে বৈঠক হয়েছে। প্রচারের ধারাটাও তো ধরে রাখতে হবে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এলাকা বদলের সঙ্গে বদলেছে প্রসূনের সঙ্গীও। প্রাক্তন কাউন্সিলরেরা নিজের নিজের এলাকায় প্রার্থীর জিপে জায়গা করে নিয়েছেন। তিন ঘণ্টার প্রচার সেরে বেলা ১১টায় থামল জিপ। দুপুরে ঝোলভাত খেয়ে বিকেলে ফের বেলুড়ে যাওয়ার প্রস্তুতির মধ্যে প্রসূন মজা করে বললেন, ‘‘ছোটবেলা থেকে ফুটবল খেলছি। কয়েক লক্ষ ডিম খেয়েছি। তাই এখন বেশি খাই না।’’ বাচ্চাদের মাথায় হাত বুলিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘তুমি ফুটবলার হবে। মোহনবাগান, না-হলে ইস্টবেঙ্গলে খেলবে। আর আমি গোল দেব বিরোধীদের।’’