বামেদের দুই হাতে রেখে কংগ্রেস ছাড়ল পাঁচ

কংগ্রেসের জেতা উত্তর মালদহ আসনে বুধবার প্রার্থী ঘোষণা করেছে সিপিএম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯ ০৪:৫৪
Share:

কংগ্রেসের জেতা চার আসন ছেড়ে রেখে ‘ইতিবাচক সাড়া’ দেওয়ার জন্য তাদের ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। ছবি: সংগৃহীত।

সিপিএমের জেতা আসনে প্রার্থী দিয়ে পাঁচটা ‘হারা’ আসন তাদের জন্য ছেড়ে রাখল কংগ্রেস। কিন্তু জেতা আসন না ছাড়লে সমঝোতা সম্ভব নয় বলে ফের জানিয়ে দিল সিপিএম। কংগ্রেসের জেতা উত্তর মালদহ ও জঙ্গিপুরে প্রার্থী ঘোষণা করে দিল তারাও। এখনও ছাড়া থাকল অধীর চৌধুরীর বহরমপুর ও আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরীর দক্ষিণ মালদহ। তবে একই সঙ্গে ফের বলে রাখা হল, সিপিএমের জেতা দুই আসন কংগ্রেস ছেড়ে দিলে বামেরাও তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনায় রাজি।

Advertisement

বাংলায় লোকসভা ভোটে কংগ্রেস ও বামেদের বোঝাপড়া আর বাস্তবায়িত হওয়ার সম্ভাবনা যে খুবই ক্ষীণ, তা নিয়ে দুই শিবিরেই এখন বিশেষ সংশয় নেই। বামেরা এখন একের পর এক পদক্ষেপ করে কংগ্রেসকে চাপে ফেলে জনমানসে বার্তা দিতে চাইছে যে, বিজেপি এবং তৃণমূলের মোকাবিলায় সব ভোট এক জায়গায় আনতে কংগ্রেসই বেঁকে বসেছে। রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ আসন সিপিএমকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে রাহুল গাঁধী এক বার জট খুলেছিলেন। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস ফের সেই একই জট পাকিয়ে হঠাৎ একা লড়ার অবস্থানে ফিরে যাওয়ায় বীতশ্রদ্ধ এআইসিসি-ও আর এই নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে না।

কংগ্রেসের জেতা উত্তর মালদহ আসনে বুধবার প্রার্থী ঘোষণা করেছে সিপিএম। ওই কেন্দ্রের কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নূর ভোটের আগেই তৃণমূলে গিয়ে এখন সেই দলের প্রার্থী হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আগামী শনিবার উত্তর মালদহের চাঁচলে সভা করতে এসে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গোটা বিষয় নিয়ে কী বলেন, তার দিকে নজর রাখছে বাম ও কংগ্রেস দুই শিবিরই।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কংগ্রেসের জেতা চার আসন ছেড়ে রেখে ‘ইতিবাচক সাড়া’ দেওয়ার জন্য তাদের ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। প্রদেশ কংগ্রেসের সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্য এ দিন বলেছেন, ‘‘বামেদের হুইপ আমরা মানতে পারছি না! তবে সৌজন্য দেখিয়ে আমরাও পাঁচটা আসন ছেড়ে দিচ্ছি।’’ কিন্তু বামেদের জেতা দুই আসনে প্রার্থী দিয়ে আসানসোল, ডায়মন্ড হারবার, বিষ্ণুপুর, তমলুক ও বোলপুর— এই পাঁচ আসন ছেড়ে দিয়ে কী লাভ, তার কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যাও প্রদীপবাবুদের কাছ থেকে মেলেনি।কয়েক বছর আগে রাজ্যসভায় মনোনয়ন জমা দিয়েও তৃণমূলের সঙ্গে জোটের স্বার্থে প্রত্যাহার করেছিলেন কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান। তখন দলের ‘মর্যাদা’র প্রশ্ন আসেনি, তা হলে এখন বোঝাপড়ার আলোচনায় সম্মানের প্রশ্নে সমস্যা হল কেন? প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘তখন একটা আসনে ওটা হয়েছিল। একটা আর ৪২টা আসন তো এক নয়!’’

প্রদীপবাবুর বক্তব্য শুনে বিমানবাবু আবার বলেছেন, কংগ্রেসই হঠাৎ অবস্থান বদলানোয় সমস্যা তৈরি হয়েছে।উত্তর মালদহে বিশ্বনাথ ঘোষ এবং জঙ্গিপুরে জুলফিকার আলিকে প্রার্থী ঘোষণা করেও বিবৃতিতে বিমানবাবু বলেছেন, ‘‘এ সত্ত্বেও পূর্বের বোঝাপড়া অনুযায়ী বামফ্রন্টের জেতা দুই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী প্রত্যাহার করলে বামফ্রন্টও ইতিবাচক দৃষ্টিতে পুনর্বিবেচনা করবে।’’প্রদেশ কংগ্রেস আজ, বৃহস্পতিবার ফের নির্বাচন কমিটির বৈঠক ডেকেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন