প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই ডুয়ার্সের চা বলয়কে নজরে রাখছে তৃণমূল এবং বিজেপি। সেই চা বলয়ের ‘ঘরের ছেলে’কে প্রার্থী করে জোর লড়াই দিতে চাইছে কংগ্রেসও। গত কয়েক দিন ধরেই মণিকুমার ডার্নালের নাম জলপাইগুড়ি আসনে কংগ্রেসের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোরাফেরা করছিল। বীরপাড়ার সুভাষপল্লির বাসিন্দা সদাহাস্যময় এই নেতা চা বাগানের পরিচিত মুখ। বাম, বিজেপি, এমনকি তৃণমূলের চা বলয়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও মণি ডার্নালের যোগাযোগ রয়েছে। চা শ্রমিক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চের আহ্বায়কও তিনি। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে চা বলয় থেকে ভোটে দাঁড়িয়ে জেলা পরিষদের আসনেও জিতেছিলেন তিনি। তাঁর হাত ধরেই চা বলয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে কংগ্রেস।
মণি ডার্নালের নাম ঘোষণার পর থেকে তৃণমূল, বিজেপি এবং বাম শিবিরেও অঙ্ক কষা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের প্রার্থী বিদায়ী সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মণ। সিপিএমের প্রার্থী শিক্ষক নেতা ভগীরথ রায়। জলপাইগুড়িতে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাঁদের নাম শোনা যাচ্ছে তাঁরা কেউই চা বলয়ের নন। এই পরিস্থিতিতে চা বলয়ের লোককে প্রার্থী করায় নিজেদের কিছু সুবিধা হল কিনা, সেই অঙ্কই এখন কষছে সকলে।
তৃণমূল নেতাদের একাংশ দাবি করছেন, এতে তাঁদেরই লাভ হবে। তাঁদের যুক্তি, চা বলয়ে মণি ডার্নালের প্রভাব রয়েছে। তার ফলে বিরোধী ভোটের বড় অংশ কংগ্রেসের ঘরে যেতে পারে। তেমন হলে বিজেপির ভোটেও ভাগ বসাতে পারেন ডার্নাল, দাবি তৃণমূল নেতাদের। বিজেপির পাল্টা দাবি, একসময়ে চা বলয়ে কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্কের বড় অংশ তৃণমূলে গিয়েছিল। চা বলয় থেকে কংগ্রেস প্রার্থী দেওয়ায় সেই ভোটের অনেকটাই তৃণমূলের থেকে কংগ্রেসে ফিরে যেতে পারে। তাতে গেরুয়া শিবিরের লাভ হতে পারে বলে বিজেপি নেতাদের দাবি।
কংগ্রেস প্রার্থী অবশ্য সমীকরণ নিয়ে কোনও কথা বলতেই রাজি নন। তিনি বললেন, “কার কী অঙ্ক করার, ইচ্ছেমতো করে যাক। চা বলয় তো বটেই, তা ছাড়া জলপাইগুড়ি গ্রামীণেরও প্রচুর ভোট আমরা পাব। তৃণমূল, বিজেপির প্রতি মানুষ বিরক্ত। আমরাই মানুষের আর্শীবাদ পাব।”
নাম ঘোষণার পরদিনই জলপাইগুড়িতে ফিরেছেন কংগ্রেস প্রার্থী। মঙ্গলবার বিকেলে জেলা কংগ্রেসের দফতরে আসেন। দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনাও করেন। জানান, এ দিন রাত থেকেই প্রচার শুরু করে দিতে চান। সেই মতো জলপাইগুড়ি থেকে ফেরার পথে চা বাগান ঘুরেও যান। তাঁর কথায়, “প্রার্থী হয়েছি বলে নয়, সব সময়েই আসা-যাওযার পথে চা বাগান ঢুকে কথা বলে আসি। এ দীর্ঘদিনের অভ্যেস।”