লোকসভা ভোট চলাকালীন তাঁর জেলার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা খুব জরুরি পরিস্থিতি ছাড়া ছুটি নিতে পারবেন না। প্রশ্ন উঠছে বীরভূম জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের একটি নির্দেশকে ঘিরে। ছবি: সংগৃহীত।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ছুটি বাতিলের নির্দেশ রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আসতে পারে। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ তেমন নির্দেশ দিতে পারে কি?
এই প্রশ্ন উঠছে বীরভূম জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের একটি নির্দেশকে ঘিরে। ওই সংসদের চেয়ারম্যান রাজা ঘোষের নির্দেশ, লোকসভা ভোট চলাকালীন তাঁর জেলার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা খুব জরুরি পরিস্থিতি ছাড়া ছুটি নিতে পারবেন না। বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, সরকারের কাছ থেকে এমন নির্দেশ আসতে পারে, কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ থেকে আসতে পারে না।
রাজাবাবুর নির্দেশে বলা হয়েছে, আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি বলবৎ হয়ে গিয়েছে। ভোট পর্ব শেষের আগে প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কোনও ছুটি আর অনুমোদন করা যাবে না। মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হলে ছুটি মিলবে। এ ছাড়া অন্য কোনও ছুটি পাওয়া যাবে না। আগেই যাঁদের সিসিএল-এর আবেদন মঞ্জুর হয়েছে, তাঁদের ভোটের ডিউটি পড়ে গেলে সেই ছুটি বাতিল বলে গণ্য হবে।
প্রশ্ন উঠছে, ভোটের পরিপ্রেক্ষিতে ছুটি বাতিল হলে তো সারা রাজ্যেই তা হওয়ার কথা। একটি বিশেষ জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রধান কী ভাবে এমন নির্দেশ জারি করলেন? বাম নেতৃত্বাধীন শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ-র সাধারণ সম্পাদক সমর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সংসদের চেয়ারম্যান কী করে এমন নির্দেশ দিতে পারেন। এই এক্তিয়ার ওঁর নেই।’’ এমন নির্দেশ দেওয়া যায় না বলে জানাচ্ছেন বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গৌতম পাণ্ডাও।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, হয়তো রাজ্য সরকারের কাছ থেকে কোনও নির্দেশ পেয়ে এমন নির্দেশ বীরভূমের সংসদের চেয়ারম্যান দিয়েছেন। কিন্তু নবান্ন সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই ধরনের কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি।
রাজাবাবু অবশ্য শুক্রবার জানান, জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করেই তিনি এই নির্দেশ দিয়েছেন। ‘‘বহু স্কুলে বুথ হবে। নির্বাচনের আগে বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিরা বারবার সেই সব বুথ পরিদর্শনে আসবেন। এই সময়ে শিক্ষকদের অনুপস্থিতি খুবই অসুবিধার হয়ে দাঁড়ায়। তাই জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করেই এমন নির্দেশ দিয়েছি,’’ বলেন ওই প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান।