Lok Sabha Election 2019

কেন বদলি জেলাশাসক, জল্পনা চলছে বাঁকুড়ায়

উমাশঙ্করকে নির্বাচন কমিশনের সরিয়ে দেওয়া নিয়ে রবিবার রাতেই প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে নানা কথাবার্তা শুরু হয়েছিল।

Advertisement

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৯ ০৩:৪৭
Share:

বাঁকুড়ার নতুন জেলাশাসক মুক্তা আর্য। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

যোগী আদিত্যনাথের সভার অনুমতি দেওয়া নিয়ে ‘জটিলতা’র শুরু। মাঝে ‘সমস্যা’ বিপ্লব দেবের সভার অনুমতি না দেওয়ায়।

Advertisement

শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রচারসভার অনুমতি নিয়ে টানাপড়েনের সূত্রে রবিবার ভোট শেষ হতেই জেলাশাসকের পদ থেকে উমাশঙ্কর এসকে সরানো হয়েছে—এমন ‘তত্ত্ব’ উড়ছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের অন্দরে। বিতর্ক উস্কে দিয়ে বিজেপির রাজ্য নেতা তথা বাঁকুড়া লোকসভা আসনের প্রার্থী সুভাষ সরকারের মন্তব্য, ‘‘কেউ গণতন্ত্রের ঊর্ধ্বে উঠতে গেলে কী হতে পারে, কমিশনের এই সিদ্ধান্ত তারই উদাহরণ হয়ে থাকল।’’

তবে সোমবার উমাশঙ্করের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘‘কমিশনের নির্দেশ মেনে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছি।’’ নতুন জেলাশাসক মুক্তা আর্য এ দিন সকালে দায়িত্ব নিয়েই বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজে ‘স্ক্রুটিনি’ ও স্ট্রংরুম ‘সিল’ করার কাজ দেখাশোনা করেন।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

উমাশঙ্করকে নির্বাচন কমিশনের সরিয়ে দেওয়া নিয়ে রবিবার রাতেই প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে নানা কথাবার্তা শুরু হয়েছিল। এ দিন তার তোড় আরও বাড়ে। প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ এ দিন মনে করিয়ে দেন, ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়ায় উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির যোগী আদিত্যনাথের সভা করার কথা ছিল বাঁকুড়ায়। প্রশাসনিক ‘জটিলতায়’ শেষ পর্যন্ত সভাটি হয়নি। গত ২৬ এপ্রিল বিষ্ণুপুরে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বিপ্লব দেবের নির্বাচনী সভারও অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। তার পরে গত ৯ মে বাঁকুড়া শহরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা ছিল। বিজেপি বাঁকুড়া শহর লাগোয়া করগাহিড়ে প্রধানমন্ত্রীর সভা করতে চেয়েছিল। কিন্তু সেখানে স্থায়ী ‘হেলিপ্যাড’ ও বিভিন্ন প্রকল্পের চাষবাসের ক্ষতির আশঙ্কা থাকার দাবি করে জেলাশাসক অনুমতি দেননি।

কমিশন সূত্রের খবর, উপনির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন সরাসরি সে ব্যাপারে ‘হস্তক্ষেপ’ করেন। জেলাশাসকের বিরুদ্ধে ‘চরম পদক্ষেপে’র হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। পরে জেলা প্রশাসন বাঁকুড়া শহর থেকে কিছুটা দূরে কমলাডাঙায় মোদীর সভার অনুমতি দেয়।

জেলা প্রশাসনের একাধিক কর্তা এ দিন ঘনিষ্ঠ মহলে মেনেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ওই সভার অনুমতি নিয়ে বড্ড জলঘোলা হয়েছিল। নানা দিক থেকে চাপ আসছিল। মনে হয়, সে জন্যই শেষ পর্যন্ত জেলাশাসকের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হল।’’

বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের নির্দেশেই উমাশঙ্কর এস প্রধানমন্ত্রীর সভার অনুমতি দিতে টালবাহানা করেছিলেন।’’ অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁয়ের মন্তব্য, ‘‘অন্যের সভা নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। কাউকে চাপ দেওয়ারও প্রশ্ন নেই।’’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রশাসনিক কর্তা আবার বলেছেন, ‘‘জেলাশাসকের বিরুদ্ধে যদি পক্ষপাতের অভিযোগই ছিল, তা হলে ভোট পর্যন্ত কেন অপেক্ষা করল নির্বাচন কমিশন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন