রবিবার কোচবিহারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভামঞ্চ থেকে বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেছিলেন, ‘‘অভিষেক গুপ্ত, তুমি কত বড় এসপি দেখব।’’ এর ঠিক দু’দিন পরে, মঙ্গলবার বিকেলে নির্বাচন কমিশন এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কোচবিহারের পুলিশ সুপার অভিষেককে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দিল। সেই জায়গায় দায়িত্ব নিতে বলা হয়েছে রাজ্যের এসএস (আইবি) অমিতকুমার সিংহকে। কমিশনের নির্দেশ মেনে এ দিন বিকেলেই নতুন নিয়োগ নির্দেশিকা জারি করে নবান্ন। অভিষেককে স্পেশ্যাল ইন্ডিয়া রিজ়ার্ভ ব্যাটালিয়নের (এসআইআরবি) কম্যান্ড্যান্ট পদে বসানো হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন জানায়, আজ বুধবারের আগে নতুন পুলিশ সুপারকে দায়িত্ব ভার বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, অমিত কমিশনের নির্দেশেই পুলিশ পর্যবেক্ষক হিসেবে বিহারে গিয়েছেন। তাঁকে ফেরাতে সময় লাগবে। তৃণমূল এর মধ্যেই এই বদলির প্রতিবাদে কমিশনে চিঠি দিয়েছে। আজ, বুধবার কমিশনে দেখা করতেও যাবেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন।
আগে বীরভূম ও ডায়মন্ড হারবারের এসপিকে বদলি করেছে কমিশন। বদলি হয়েছে কলকাতা ও বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারেরও। কিন্তু ভোটের দু’দিনও বাকি নেই, তার মধ্যে জেলার পুলিশ সুপারকে সরানোর ঘটনা নজিরবিহীন, বলছেন রাজনীতিকরা। তৃণমূল অভিযোগ তুলেছে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে। তারা আঙুল তুলেছে রবিবার মুকুলের বক্তৃতার দিকে। রবিবার মুকুল বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে সামনে রেখে বলতে চাই, এই জেলার রিটার্নিং অফিসার কৌশিকবাবু ও জেলার পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত, পারলে আপনাদের উর্দিটা খুলে ফেলুন। অভিষেক গুপ্ত, ১০ বছর রাজনীতিতে থাকব। তুমি কত বড় এসপি, আমরা দেখব।’’
এর মধ্যে নিরপেক্ষতার অভাব দেখছে তৃণমূল। দিল্লিতে কমিশনের কাছে দেওয়া চিঠিতে বিষয়টির উল্লেখ করেছে তারা। সঙ্গে মুকুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ও অভিষেকের বদলির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে দেখার আর্জিও জানানো হয়েছে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ কমিশন যে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে কাজ করছে, কমিশন যে কেন্দ্রের দলদাস, তা প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘এই কমিশন কী ভাবে নিরপেক্ষ ভূমিকা নেবে? মানুষ সব দেখছে।’’ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের দফতর থেকে মুকুল প্রসঙ্গে কিছুই বলতে চাওয়া হয়নি। তবে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর ফলে কোচবিহারের মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন।’’
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯