পাশাপাশি: মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে পুজো দিলেন আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল প্রার্থী দশরথ তিরকে। সঙ্গে তাঁর স্ত্রী চন্দ্রকলা। বুধবার আলিপুরদুয়ার দুর্গাবাড়িতে। ছবি: নারায়ণ দে
পাঁজি অনুযায়ী দুপুর বারোটা পর্যন্ত ছিল ভাল সময়। ডুয়ার্সকন্যায় পৌঁছতে হবে ওই সময়ের মধ্যেই। কিন্তু মিছিল যখন বেশ দূরে, ঘড়ির কাটা তখনই পৌনে বারোটা ছুঁয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় আর দেরি না করে মিছিল ছেড়ে দলের প্রার্থী দশরথ তিরকেকে নিয়ে টোটোয় উঠে পড়লেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোহন শর্মা। দ্রুত গতিতে ডুয়ার্সকন্যায় পৌঁছে হাঁফ ছাড়লেন দশরথও। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে হাসিমুখে বললেন, “যাক পাঁচ মিনিট আগেই পৌঁছে গিয়েছি।”
মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার পর ডুয়ার্সকন্যার বাইরে বেরিয়ে এসেও তৃণমূল নেতাদের মুখে হাসি অব্যাহত ছিল৷ সেইসঙ্গে যেন খানিকটা আত্মবিশ্বাসও। জেলা জুড়ে তাদের দলের নেতা-কর্মীরা প্রচারে নেমে পড়েছেন। প্রার্থীর মনোনয়ন জমাও হয়ে গেল। অথচ, প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ায় ভোটের মাত্র বাইশ দিন আগেও যেন ‘ময়দান ছাড়া’ বিজেপি৷ যার জেরে প্রথমে বিজেপির দিকে কটাক্ষের সুরে মোহন বললেন, “ওরা যদি প্রার্থী খুঁজে না-ই পায়, আমাদের বলতে পারে৷ আমরা খুঁজে দেব৷” তারপরই যোগ করলেন, “আগে বলেছিলাম দুই লক্ষের বেশি ভোটে জিতব৷ আর এখন বলছি, আড়াই লক্ষ ভোটে জিতব।”
দলের প্রার্থীর মনোনয়ন পেশকে ঘিরে এ দিন সকাল থেকেই আলিপুরদুয়ারে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উচ্ছাস ছিল চোখে পড়ার মতো। তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের এক নেতা পুরোহিতের সঙ্গে কথা বলে পাঁজি অনুযায়ী সকাল ন’টা একচল্লিশ মিনিট থেকে দুপুর বারোটার মধ্যে প্রার্থীকে ডু্য়ার্সকন্যায় পৌঁছে যেতে বলেছিলেন। সেই অনুযায়ী সকাল সকাল আলিপুরদুয়ার শহরের হাটখোলা দুর্গাবাড়ি মন্দিরে স্ত্রী চন্দ্রকলাকে নিয়ে পুজো দিতে চলে আসেন দশরথ। সেখানে কালী মন্দিরে পুজো দেন৷ জেলা সভাপতির সঙ্গে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ঢাকও বাজান৷ এরপর মন্দিরের বাইরে থেকেই শুরু হয় তৃণমূলের মিছিল৷ ঢাক ও রণ পা নিয়ে মিছিলে হাজির কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক৷ কিন্তু সঠিক সময়ে মিছিল শুরু হলেও বাধ সাধে রেল গেট৷ যার ফলে আটকে যায় মিছিল৷
ট্রেন যাওয়ার পর রেলগেট খুললে ফের মিছিল শুরু হয়৷ কিন্তু ততক্ষণে প্রায় বারোটার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে ঘড়ির কাটা৷ এ দিকে নেতাদের গাড়িও মিছিলের পেছনে৷ এই অবস্থায় আর ঝুঁকি না নিয়ে মোহন ও দশরথ একটি টোটোতে উঠে পড়েন৷ সেই টোটোতে চেপে ডুয়ার্সকন্যায় পৌছে মনোনয়ন জমা দেন দশরথ৷ তাঁরা ডুয়ার্সকন্যায় পৌঁছানোর খানিক পরে সেখানে পৌঁছায় দলের কর্মী-সমর্থকদের মিছিল৷
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে দশরথ বলেন, “পুরোহিতের বিধান অনুযায়ী দলের নেতাদের নির্দেশ ছিল বারোটার মধ্যে ডুয়ার্সকন্যায় পৌঁছে যাওয়ার৷ শেষ পর্যন্ত পাঁচ মিনিট আগেই পৌঁছাতে পেরেছি৷”