ভোটকর্মীদের বিক্ষোভ, বাহিনী ১০০ কোম্পানি

শনিবার কমিশনের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। কোনও রাজ্যে ভোটকর্মীরা কেন্দ্রীয় বাহিনী না-থাকলে ভোট নিতে না-যাওয়ার দাবি জানাননি। ফলে তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে।’’

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৪৭
Share:

—ফাইল চিত্র।

প্রথম দফার দুই কেন্দ্র, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের ভোটে প্রায় ১০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে নির্বাচন সদন। তাদের লক্ষ্য, সমস্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা। তা হলে অন্তত ৭৫ ভাগ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা সম্ভব হবে বলে মনে করছে কমিশন।

Advertisement

শনিবার কমিশনের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। কোনও রাজ্যে ভোটকর্মীরা কেন্দ্রীয় বাহিনী না-থাকলে ভোট নিতে না-যাওয়ার দাবি জানাননি। ফলে তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে।’’ প্রসঙ্গত, নিরাপত্তা চেয়ে বারবার সরব হয়েছেন ভোটকর্মীরা। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের পরে চেতলা গার্লস স্কুলের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে মূলত শিক্ষকেরা নিরাপত্তার বিষয়টি তুলে বিক্ষোভ দেখান।

কমিশন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ৪৯ কোম্পানি বাহিনী পাঠানোর কথা জানানো হয়েছে। শনিবার আরও ৩০ থেকে ৩৫ কোম্পানি বাহিনী রাজ্যে আসছে বলে রাজ্যের মুখ্য আইনি আধিকারিকের (সিইও) দফতরকে বার্তা দিয়েছে কমিশন। এখানেই শেষ নয়, কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে অতিরিক্ত ১০-১৫ কোম্পানি বাহিনীও শেষ পর্যায়ে পাঠানো হতে পারে। সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ কোম্পানি বাহিনী দিয়ে আলিপুরদুয়ার-কোচবিহারে ভোট হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।

Advertisement

কমিশনের ইঙ্গিত, প্রাথমিক ভাবে কমিশন ১০ কোম্পানি সিআরপির সঙ্গে রাজ্যে বহাল কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে নিয়ে দুই কেন্দ্রে ভোট

করাতে চেয়েছিল। তা নিয়ে বিরোধী দলগুলি ক্ষোভে ফেটে পড়ে। কমিশনের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘বাহিনী বেশি পেলে আমাদের কোনও

অসুবিধা নেই। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তা না-পাঠালে কোথা থেকে কমিশন বাহিনী জোগাড় করবে?’’

সূত্রের দাবি, কমিশনের অসহায়তার কথা জেনে ব্রিগেডের সভায় বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পর্যন্ত নালিশ জানান। তার পরেই পরিস্থিতি বদলাতে থাকে। শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ দফতরের কর্তাদের জানিয়ে দেন, বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

কারণ, সে রাজ্যে পুলিশের উপর রাজনৈতিক দল থেকে ভোটকর্মী কারও ভরসা নেই।

কমিশন জানিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের সীমান্তে থাকা বিএসএফ দিয়েই বাড়তি বাহিনীর ঘাটতি মেটানো হবে। নেওয়া হতে পারে নেপাল সীমান্তে থাকা এসএসবিও। আগামী দু’দিনের মধ্যেই পুরো বাহিনীর পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়ে যাবে।

কমিশনের এক কর্তা বলেন, ‘‘যে ভাবে রাজ্যের মাওবাদী এলাকা থেকে বাহিনী তুলে ভোটে দেওয়া হয়েছে, সে ভাবেই সীমান্তে মোতায়েন বিএসএফ-এসএসবিকে দুই কেন্দ্রে আনা হবে।’’

কেন্দ্রীয় বাহিনীকে অভিনন্দন মমতার: পুলিশের শীর্ষপদে বদল নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংঘাতে গেলেও কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আপত্তি করলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বরং নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে এই বাহিনীকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন তিনি। তবে দলের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘‘রাজ্য পুলিশ এদের সঙ্গে মিলে কাজ করবেন। কেউ কখনও ভাববেন না যে কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপির।’’ শনিবার আলিপুরদুয়ারের বারভিসায় দলের নির্বাচনী জনসভায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি বলছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী ওদের। বাহিনী আমাদেরও আছে।’’ অনেকের মতে, কেন্দ্রীয় বাহিনী সম্পর্কে কড়া মন্তব্য না করা মুখ্যমন্ত্রীর সচেতন সিদ্ধান্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন