গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
ভোটের সময় বুথ দখল, অশান্তি পাকানোর নানা রকমের ‘দাওয়াই’ দিয়ে থাকেন ‘ভোট ম্যানেজার’রা। বাম জমানায় যেমন বিরোধী কংগ্রেস, তৃণমূলের তরফে রিগিংয়ের অভিযোগ করা হত, এখন তৃণমূল জমানাতেও সেই একই অভিযোগ বাম-কংগ্রেসের মুখে।
ভোটের দিন অশান্তির জেরে শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন করাতে অসুবিধার মুখে পড়তে হয় নির্বাচন কমিশনকে। বুথে আসতে ভয় পান ভোটাররা। এমনকি, ভোটের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং অফিসারদের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। বুথে কী ঘটছে, বিভিন্ন কারণে সঠিক খবর পৌঁছয় না কমিশনের কাছে। ফলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনেক দেরি হয়ে যায়। জেলায় জেলায় এমনই সব ‘ভোট ম্যানেজার’দের রুখতে পাল্টা দাওয়াইয়ের বন্দোবস্ত রেখেছে নির্বাচন কমিশন।
বুথ দখলই হোক বা বুথের বাইরে অশান্তি, সেই খবর যাতে দ্রুত রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কার্যালয়ে পৌঁছয়, তার জন্যে একটি বিশেষ ‘অ্যাপ’ তৈরি করা হয়েছে। প্রিসাইডিং অফিসার এবং ভোটকর্মীদের মোবাইলে থাকবে সেই অ্যাপ। কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে ওই অ্যাপের মাধ্যমে দ্রুত খবর পৌঁছে যাবে কমিশনের দফতরে এবং মুহূর্তের মধ্যে ওই বুথে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারবেন কমিশনের আধিকারিকেরা।
নির্বাচনের সময় লক্ষ্য করা যায়, প্রিসাইডিং অফিসারকে ধমকে-চমকে নাস্তানাবুদ করেন ‘ভোট ম্যানেজার’রা। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও, ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বলে বিরোধীরা সরব হয়। কমিশনের কাছে সেই বার্তা পৌঁছতে দেরি হয়ে যায়। যখন খবর যায়, তত ক্ষণে বুথ দখল করে ছাপ্পা ভোট পড়ে যায়। এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং বুথস্তরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখতে এই অ্যাপের চিন্তাভাবনা। খবর পেলেই পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রয়োজনে ওই বুথে পুলিশ, অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর জন্যই এই ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন: উনি তো দেশটাই চুরি করে নিয়েছেন, রাফাল নথি নিয়ে মোদীকে তোপ মমতার
আরও পড়ুন: বিকানেরে ভেঙে পড়ল মিগ-২১ বাইসন যুদ্ধবিমান, নিরাপদে অবতরণ পাইলটের
এ বারের ভোটে শুধুমাত্র এসএমএস-নির্ভর ‘ভোট মনিটরিং সিস্টেম’-এর উপর ভরসা রাখতে চাইছেন না কমিশনের আধিকারিকেরা। সে কারণে ওই অ্যাপ তৈরি করছে এ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কার্যালয়। বুথের পরিস্থিতি জানানোর পাশাপাশি এসএমএস-নির্ভর পদ্ধতিতে ভোটের শতাংশের হিসেব, এ ছাড়া ভোট শুরুর আগে এবং পরে নানা তথ্য দিতে অনেক সময় সমস্যায় পড়েন প্রিসাইডিং অফিসারেরা। এত ব্যস্ততার মধ্যে দ্রুত ‘টাইপ’ করে সব কিছু জানানোও সম্ভব হয়ে ওঠে না। এ সব কথা মাথায় রেখে ওই অ্যাপে নির্দিষ্ট বিভাগ রাখা হয়েছে। রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর নিজস্ব উদ্যোগে এই অ্যাপ বানিয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলাশাসকদের এই অ্যাপের কার্যকারিতা দেখানো হয়েছে বলে কমিশন সূত্র খবর।
(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)