নির্বাচন কমিশন বৃহস্পতিবার একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আগামী ২৩ ও ২৪ মার্চ কয়েকটি স্কুলের শিক্ষকদের নির্বাচন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ছবি: সংগৃহীত।
শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থায় পড়েছেন রাজ্যের শিক্ষকদের একাংশ। এক দিকে উচ্চ মাধ্যমিকের উত্তরপত্র দেখে ঠিক সময়ে জমা দেওয়ার দায়িত্ব এবং অন্য দিকে লোকসভা নির্বাচনের প্রশিক্ষণ। একই দিনে দুই কাজ পড়ে যাওয়ায় ওই শিক্ষকেরা রীতিমতো ফাঁপরে পড়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, একই দিনে দু’টি কাজ কী ভাবে করবেন, বুঝতে পারছেন না তাঁরা।
নির্বাচন কমিশন বৃহস্পতিবার একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আগামী ২৩ ও ২৪ মার্চ কয়েকটি স্কুলের শিক্ষকদের নির্বাচন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কয়েক জন শিক্ষক জানান, ২৩ মার্চই উচ্চ মাধ্যমিকের বেশির ভাগ বিষয়ের উত্তরপত্রের মূল্যায়ন করে তা জমা দিতে হবে প্রধান পরীক্ষকের কাছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রামনগর হাইস্কুলের শিক্ষক সৌম্যব্রত মাইতি বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের নির্দেশ, প্রথম দফার খাতা ২৩ মার্চ প্রধান পরীক্ষকের কাছে জমা দিতেই হবে। আবার অন্য দিক থেকে নির্দেশ এসেছে, ২৩ মার্চ আমাকে নির্বাচনের প্রশিক্ষণে যেতে হবে। কোনটা করব? আমার তো শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থা!’’ ওই শিক্ষক জানান, তিনি খাতা পেয়েছেন ১৩ মার্চ, বুধবার। প্রথম দফার খাতা জমা দিতে দেরি হলে পরের দফার খাতা জমা দিতেও দেরি হবে। এই ভাবে চললে পুরো প্রক্রিয়াটিই বিলম্বিত হবে। রাজারহাটের একটি স্কুলের এক শিক্ষক জানান, তাঁকে প্রধান পরীক্ষকের কাছে খাতা পৌঁছে দিতে হবে ২৪ মার্চ। দু’টি দিক কী ভাবে সামলাবেন, ভেবে নাকাল তিনি।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের এক কর্তা অবশ্য জানান, লোকসভা হোক বা বিধানসভা, যে-কোনও নির্বাচনেই এই ধরনের সমস্যা হয়। এ ক্ষেত্রে খাতা দু’-এক দিন দেরিতে প্রধান পরীক্ষকের কাছে পৌঁছলেও পুরো প্রক্রিয়ায় দেরি হওয়ার কথা নয়। উচ্চ মাধ্যমিকের এক প্রধান পরীক্ষক বলছেন, ‘‘এক দিন বা দু’দিন দেরি হলে সমস্যা হবে না, এই নির্দেশ সংসদ জানিয়ে দিলে আমরা নিশ্চিত হতে পারি। কিন্তু তেমন কোনও নির্দেশ তো এখনও আসেনি। তাই আমরাও বিভ্রান্তিতে রয়েছি।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রাজ্যের শিক্ষক সংগঠনগুলির অভিযোগ, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ এবং নির্বাচন কমিশনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব আছে। তাই এই বিভ্রান্তি। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘এই ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের সংবেদনশীল হওয়া দরকার। সংসদের সঙ্গে আগে থেকে তারা আলোচনা করলে পরীক্ষকেরা এমন অসুবিধায় পড়তেন না।’’