প্রচারে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হুমায়ুন কবীর। নিজস্ব চিত্র
পোশাক ছাড়ার মতো ক্রমাগত দল বদলেছেন বটে, তবে হুমায়ুন আছে হুমায়ুনেই!
কংগ্রেস থেকে তৃণমূল হয়ে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার আগে বছর দেড়েকের জন্য ফের কংগ্রেস ছুঁয়ে এ বার শক্তিপুরের হুমায়ুন কবীর মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে বিজেপির প্রতীকে প্রার্থী। নাম ঘোষণার পরে কালক্ষেপ করেননি তিনি। প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অধীর চৌধুরীর একদা ছায়াসঙ্গী হুমায়ুন রাতটুকু পার করেই বুধবার সকালেই বেরিয়ে পড়েছেন নিজের ভোট প্রচারে। আর মাঠে নেমেই ঘোষণা করেছেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে তৃণমূল কোনও ফ্যাক্টর নয়। আমার সঙ্গে লড়াই হবে কংগ্রেসের প্রার্থী আবু হেনার।’’
সেই সঙ্গে তৃণমূলের পক্ষে মুর্শিদাবাদ জেলা পর্যবেক্ষক, তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দুর অধিকারীর উদ্দেশ্যে তাঁর ‘পরামর্শ’, ‘‘মুখ পোড়াতে না চাইলে মুর্শিদাবাদ জেলা ছেড়ে তিনি যেন মেদিনীপুরে গিয়ে নিজের গড় সামলান।’’
ওই ‘পরামর্শ’ দেওয়ার নেপথ্যে রয়েছে পরিবহণমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা নন্দীগ্রামের একটি সমবায় সমিতির নির্বাচনী ফলাফল। মাস দুয়েক আগের নির্বাচনে রামনগরের ওই সমবায় সমিতির ১২টি আসনের ১২টিই বিজেপি দখল নিয়েছে। তাই মন্ত্রী শুভন্দুর একদা সতীর্থ, প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুনের পরামর্শ, ‘‘শুভেন্দুর বাবা পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি লোকসভার প্রার্থী। সেখানে গিয়ে তিনি মনযোগ দিন। তারপর মুর্শিদাবাদের কথা ভাববেন।’’ বহরমপুর লোকসভার অধীন রেজিনগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের ‘হাত’ প্রতীকে ২০১১ সালে জেতার পর হুমায়ুন তৃণমূলে যোগ দিয়ে মন্ত্রী হয়েছিলেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
২০১৩ সালে রেজিনগর বিধানসনভার উপনির্বাচনে হেরে যান। তার পর ২০১৫ সালে তৃণমূল থেকে তিনি দল থেকে বহিষ্কৃত হন। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে রেজিনগরের নির্দল প্রার্থী হুমাযুন হেরে গিয়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। পুলিশি মদতে তৃণমূল সব বুথ দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের দিন রেজিনগর এলাকায় ভোট থেকে সরে দাঁড়ান হুমায়ুন। তাঁর কয়েক দিন পর তিনি কংগ্রেসে ছেড়ে দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। গত বছরের পঞ্চায়েত ভোটের সেই ক্ষত তাঁর মন থেকে আজও মুছে যায়নি। প্রচারের নেমেই তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রশাসনকে পাশে নিয়ে মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। এ বার ভোট হবে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের হাত ধরে। এ বারে হিসাব অন্য রকম হবে।’’ নিজের এলাকা বহরমপুর লোকসভা ছেড়ে মুর্শিদাবাদে কেন? জবাব, ‘‘বহরমপুরে দাঁড়াব না, তা বলিনি। তবে আমি দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়ে ছিলাম মুর্শিদাবাদ আমার পছন্দ।’’