‘অচ্ছে দিন’ কী, জানে না আদিবাসী পাড়া

বিজেপি কিন্তু মনে করছে বুনিয়াদপুর থেকে তারা ভালই ভোট পাবে।

Advertisement

নীহার বিশ্বাস

বুনিয়াদপুর শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯ ০১:২১
Share:

শনিবার বালুরঘাট কেন্দ্রের প্রচারে বুনিয়াদপুরেই মোদীর সভা করছে বিজেপি। ছবি: পিটিআই।

শহরের মধ্যেই এক ফুটের চাপা সরু গলি। তা পেরোলেই যেন এক টুকরো গ্রাম। আর সেই গ্রাম ‘অচ্ছে দিন’ শুনলে অবাক হয়ে তাকায়। কোনও দিন কথাটাই যেন শোনেনি এখানকার ত্রিশটি আদিবাসী পরিবার। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চেনেন। কাজ করতে করতে মুখে তুলে মধ্যবয়সী গীতা সোরেন বললেন, ‘‘ওই সাদা বুড়াটা! চিনি তো!’’ দেনা মার্ডির কথায়, ‘‘ওই তো আমাদের রান্নার গ্যাস দিল। কিন্তু বারোশো টাকা দিয়ে একবারই গ্যাস ভরেছিলাম। আর ভরিনি। কোথায় পাব অত টাকা?’’ দেনা মার্ডি বলেন, ‘‘রান্না করি কাঠের আঁচে। অচ্ছে দিন আমাদের জন্য নয়।’’

Advertisement

বিজেপি কিন্তু মনে করছে বুনিয়াদপুর থেকে তারা ভালই ভোট পাবে। এই এলাকা এক সময় ছিল বামেদের দুর্গ। কিন্তু বামেদের অনেক নেতা-কর্মীই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি। তাই বামেদের বেশ কিছু ভোট এ বার তাঁদের ঝুলিতে যাবে বলে বিজেপির নেতাদের আশা। আদিবাসীদের ভোটও তারাই পাবে বলে দাবি বিজেপির। যে কারণে শনিবার বালুরঘাট কেন্দ্রের প্রচারে বুনিয়াদপুরেই মোদীর সভা করছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকারের কথায়, ‘‘মোদী নিজে আসছেন। অন্যদের পাল থেকে হাওয়া কেড়ে আমাদের পালে ভরে দেবেন।’’

কিন্তু খোদ মোদী সম্পর্কেই আদিবাসী পাড়ায় কোনও তাপউত্তাপ নেই। বিজেপির দাবি, এখানে বাড়ি বাড়ি মোদীর উজ্জ্বলা যোজনায় রান্নার গ্যাস দেওয়া হয়েছে। গীতা বলেন, ‘‘তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু একবারে হাজার বারোশো টাকা দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। তাই প্রথম বারের পরে আর নিতে পারিনি।’’ তাঁদের বাড়িতে তাই সাবেক কাঠের আঁচেই উনুন জ্বলে।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এই ৮ নম্বর ওয়ার্ডে জলের কষ্ট। আলো জ্বলে না। রাস্তা ভাল নয়। নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল। শুভেন্দুবাবুর বক্তব্য, ‘‘পুরসভা তৃণমূলের। তাদেরই পুর পরিষেবা দেওয়ার কথা।’’ পুরপ্রধান অখিল বর্মণের কথায়, এলাকার মানুষ তৃণমূলেই আস্থা রাখেন। উন্নয়নের সব প্রকল্পই তৈরি, ভোট এসে পড়ায় করা যাচ্ছে না। যা শুনে বিজেপির পাল্টা দাবি, ‘‘এত দিন হয়নি কেন?’’ আর আরএসপির বিশ্বনাথ চৌধুরীর দাবি, বিজেপি, তৃণমূল—কাউকেই বিশ্বাস করেন না এলাকার মানুষ। তাই বামেরা নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখবে।

তবে এই তর্ক চলছে পাড়ার বাইরে। দেনা, গীতারা মোদীর সভায় যাবেন কি না, এখনও ঠিক করেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন