ছবি: পিটিআই।
বাংলায় ভোটের প্রচারে এসে সারদা-কাণ্ড নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ বার এক ধাপ এগিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ দাবি করলেন, কেন্দ্রে তাঁরা ক্ষমতায় ফিরলে ৯০ দিনের মধ্যে সারদা-কাণ্ডের বিচার হবে এবং দোষী নেতাদের জেলে পাঠানো হবে। কেন্দ্রে পাঁচ বছর সরকার চালিয়ে সারদা তদন্তের কী হাল হল, পত্রপাঠ শাহকে সেই প্রশ্ন ফিরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল এবং সিপিএম।
রাজ্যে এসে শাহ বুধবার হাওড়া, আরামবাগ, চুঁচুড়া ও কল্যাণীতে চারটি সভা করেছেন। হাওড়ার সভায় সারদা-কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘চিট ফান্ডের দুর্নীতিতে বাংলায় ২৫-৩০ হাজার কোটি টাকা খেয়ে গিয়েছে। গরিবের টাকা। মমতাদিদি থাকলে এঁদের সাজা হবে কি? হবে না। বিজেপি ক্ষমতায় এলে ৯০ দিনের মধ্যে এঁদের সিধে করা হবে!’’ কল্যাণীতেও একই কথা বলেছেন শাহ।
সেই সঙ্গে সব সভাতেই শাহ দাবি করে গিয়েছেন, ‘‘আজ ১ তারিখ। পয়লা মে। আর তো মাত্র ২২ টা দিন বাকি! আগামী ২৩ তারিখ ভোট গণনা। বাংলা থেকে ২৩ টি আসন বিজেপি দখল করবে।’’বাংলায় আইনশৃঙ্খলার হাল বেহাল, বোমার আওয়াজে রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুর চাপা পড়ে গিয়েছে, শুধু বোমার কারখানা হয়েছে— এই সব অভিযোগেরই পুনরাবৃত্তি এ দিন শোনা গিয়েছে শাহের গলায়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সারদা-কাণ্ডে ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’ ভেদ করার জন্য সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে। সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘গত পাঁচ বছরে অন্তত ১০ বার নানা নির্বাচনের সময়ে এই কুমির ছানা বিজেপি দেখিয়েছে এবং মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে।আমরাই চিট ফান্ডের দুর্নীতির সঙ্গে যুক্তদের গ্রেফতার করেছি। বিজেপি জবাব দিক, এত দিন এই ঘটনায় দোষীদের সিবিআই গ্রেফতার করতে পারেনি কেন?সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘ওঁদের লজ্জা থাকলে এমন কথা বলতেন না! সিবিআইকে সর্বোচ্চ আদালত তদন্তের ভার দেওয়ার পরে ১৮২৫ দিন পার হয়ে গেল। রাঘব বোয়ালেরা ধরা পড়ল না! এখন আবার বলছেন ৯০ দিন! এর মধ্যে সারদায় অভিযুক্ত নেতা বিজেপির পতাকা হাতে নিয়ে শাহদের মঞ্চ আলো করে বসছেন!’’
চুঁচুড়ায় জেলাশাসকের দফতর লাগোয়া মাঠে শাহের সভায় ভিড় ছিল ভালই। হুগলি জেলা বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, আরামবাগের পাড়ুলে জনসভায় দলীয় কর্মীরা যাওয়ার পথে অন্তত তিনটি জায়গায় তৃণমূল সমর্থকেরা তাঁদের আটকায়। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব তা অস্বীকার করেছেন।বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী শান্তনু ঠাকুরের সমর্থনে কল্যাণী সেন্ট্রাল পার্কে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির সভায় অবশ্য তেমন লোক দেখা যায়নি।