২০০৭ সাল থেকে বার বার নন্দীগ্রাম হত্যাকাণ্ডে তাঁর নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় পরে সেই নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েই বুধবার সেদিনের প্রকৃত ঘটনার বিবরণ দিলেন তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী তথা প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ।
মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তারপর এদিন নন্দীগ্রামে পা রাখেন লক্ষণ শেঠ। নন্দীগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে সভায় লক্ষ্ণণবাবু বলেন, ‘‘২০০৭ সালের৩ জানুয়ারির পরে আর নন্দীগ্রামে আসিনি। হলদিয়া মেলার কাজে সেই সময় যুক্ত ছিলাম। তারপরও যে ভাবে এলাকায় রাস্তা কেটে, গাছের গুঁড়ি ফেলে আন্দোলন করা হচ্ছিল তাতে সাংসদ হিসেবে এলাকায় আমার আসা উচিত ছিল। কিন্তু আমি এলে উত্তেজনা বাড়তে পারে আশঙ্কা করেই আসিনি।’’
তাঁর অভিযোগ, ‘‘নন্দীগ্রামকে দ্বিতীয় হলদিয়া বানাতে চেয়েছিলাম। মেগা কেমিক্যাল হাব বানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখানকার কিছু তৃণমূল নেতা ও মাওবাদীরা কিছুই করতে দেয়নি।’’ ১৪ মার্চের ঘটনা নিয়ে কংগ্রেস প্রার্থীর বক্তব্য, ‘‘সেদিনের ঘটনা নিয়ে কেউ কেউ আমাকে গণহত্যার নায়ক বলে থাকেন। যদিও এর সঙ্গে আমার যোগ ছিল না। কেননা সেদিন যে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল সেই পুলিশের মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন অন্য কেউ। তাঁর নির্দেশে সব কিছু হয়েছিল।’’
লক্ষ্মণ এ দিন বলেন, ‘‘আমাকে যখন হলদিয়া সংশোধনাগার থেকে আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হল তখনই মধু, তেলুগু নারায়ণের মতো মাওবাদীদের দেখেছিলাম।’’
দীর্ঘপ্রায় ১০ বছর পরে এ দিন নন্দীগ্রামে লক্ষ্মণবাবুর সভা নিয়ে যাতে কোনও গোলমাল না বাধে তা নিয়ে সতর্ক ছিল প্রশাসন। এ দিন সভার প্রায় পুরোটো জুড়েই কার্যত ২০০৭ সালে জমি আন্দোলন চলাকালীন সব ঘটনার দায় থেকে নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করে লক্ষ্মণবাবু। যদিও এদিন লক্ষ্ণণের সভায় হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র কংগ্রেস কর্মী যোগ দিয়েছিলেন। সভায় ছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা প্রণব দাস। ছিলেন না জেলা কংগ্রেস সভাপতি মানিক ভৌমিক। দলীয় প্রাথীর সভার না থাকা নিয়ে মানিকবাবু বলেন, ‘‘ এদিন অন্যত্র প্রচারের কমর্সূচি থাকায় লক্ষ্ণণবাবুর সভায় যেতে পারিনি। তবে তিনি যা বলেছেন তা সঠিক।’’