দলবদল: লক্ষ্মণ শেঠের হাতে কংগ্রেসের পতাকা তুলে দিচ্ছেন সোমেন মিত্র। বৃহস্পতিবার বিধান ভবনে। —নিজস্ব চিত্র।
সিপিএম, নিজের তৈরি ‘ভারত নির্মাণ মঞ্চ’ এবং বিজেপির পরে এ বার কংগ্রেস। লোকসভা ভোটের আগে শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেসে যোগ দিলেন প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ। অঘটন না ঘটলে তমলুক কেন্দ্রে ১০ বছর পরে ফের লোকসভা ভোটে লড়তে দেখা যাবে তাঁকে। এ বার ‘হাত’ চিহ্নে।
অনুগামীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার বিধান ভবনে কংগ্রেসের পতাকা হাতে নিয়েছেন লক্ষ্মণবাবু। তার পরে স্মরণ করেছেন কংগ্রেসের ‘গৌরবময় ঐতিহ্যে’র কথা, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে তাদের লড়াইয়ের ইতিহাসের কথা। তাঁর যুক্তি, সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কংগ্রেসের সঙ্গেই এখন থাকা দরকার। কিন্তু নন্দীগ্রাম-কাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা তাঁর অতীত তো এখনও মোছেনি? লক্ষ্মণবাবুর দাবি, ‘‘নন্দীগ্রামে গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। আমি পুলিশমন্ত্রী ছিলাম না। নন্দীগ্রামের মানুষ সব ঘটনা জানেন, আমার সম্পর্কেও জানেন।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট হলে নন্দীগ্রামেই ২০ থেকে ২৫ হাজারের লিড পাব!’’
তমলুকে তিন বার সিপিএমের সাংসদ হয়েছিলেন লক্ষ্ণণবাবু। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে কয়েক মাস জেল খেটেছিলেন। দুর্নীতির অভিযোগে সিপিএম তাঁকে বহিষ্কারও করেছিল। আলাদা মঞ্চ গড়ে তার পরে সদলবল বিজেপিতে গিয়েছিলেন তিনি। যদিও লক্ষ্ণণবাবুর বক্তব্য, ‘‘বিজেপিতে আমি কোনও পদে ছিলাম না। মিস্ড কল দিয়ে সদস্য হয়েছিলাম। এক বছর আগেই ছেড়ে চলে এসেছি।’’ কংগ্রেসে যোগ দিতে চাইলেও রাজ্যের কিছু নেতার আপত্তিতে তা আটকে ছিল। শেষ পর্যন্ত এআইসিসি-র সবুজ সঙ্কেত মিলেছে। এআইসিসি-ই পরে বাকি কয়েকটি কেন্দ্রের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র এ দিন বলেন, ‘‘উনি অনেক দিন আগেই কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। নানা ব্যস্ততায় সেটা হয়ে ওঠেনি। গত ২৫ মার্চ কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির বৈঠক ছিল, তখন রাহুল গাঁধী লক্ষ্ণণবাবুকে দলে নেওয়ার কথা বলেন। তিনি তমলুকে প্রার্থী হবেন।’’ প্রদেশ কংগ্রেসের অন্দরের আপত্তি? সোমেনবাবুর বক্তব্য, ‘‘এটা কংগ্রেস সভাপতির সিদ্ধান্ত। তাঁর সিদ্ধান্তই প্রদেশ কংগ্রেসের বক্তব্য।’’ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান অবশ্য বলেছেন, ‘‘দিল্লিতে একটি বৈঠকের পরে পর্যবেক্ষক গৌরব গগৈয়ের উপস্থিতিতে রাহুল গাঁধী বলেছিলেন, ভোটের পরে দেখা যাবে। তার পরে কী এমন হল যে, ওঁকে দলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়ে গেল? কারা কলকাঠি নাড়ল? মানুষ সবই দেখছেন!’’