Lok Sabha Election 2019

ফোন করলে ধরেন না! মমতার ‘অহঙ্কার’ নিয়ে মোদীর তোপ, পাল্টা আঙুল মমতারও

আগাম সতর্কতার জন্য ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে ওড়িশায় তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তা নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রশংসিত হয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের ভূমিকা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৯ ১৪:৪৯
Share:

নির্বাচনী সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ নরেন্দ্র মোদীর। —ফাইল চিত্র।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়েও রাজনীতি করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার এমন অভিযোগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

Advertisement

ঘূর্ণিঝড় ফণীর দাপটে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন বলে এর আগে তাঁর দফতর সূত্রে সামনে এসেছিল। এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে নির্বাচনী প্রচারে এসে নিজেও তেমন দাবি করলেন মোদী। তাঁর অভিযোগ, একবার নয়, তিনি মমতাকে দু’বার ফোন করেছিলেন। কিন্তু কথা বলেননি মমতা। মমতা যদিও জানিয়েছেন, তিনি তখন কলকাতায় ছিলেন না। খড়্গপুরে ছিলেন বলে কথা বলার সুযোগ হয়নি।

এ দিন তমলুকের সভা থেকে মোদী বলেন, “স্পিডব্রেকার দিদি এই দুর্যোগের সময়েও রাজনীতি করার ভরপুর চেষ্টা করেন। ওই ঘূর্ণিঝড়ের পরে আমি দিদির সঙ্গে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করি। কিন্তু দিদির এত অহঙ্কার বেশি যে, উনি আমার সঙ্গে কথা বলেননি। আমি অপেক্ষা করছিলাম। ভেবেছিলাম, উনি নিজেই হয়তো পাল্টা ফোন করবেন। কিন্তু তিনি ফোন করেননি।”

Advertisement

আরও পড়ুন: তাড়া করতে গিয়ে উল্টে পড়ে ফের জখম অর্জুন সিংহ, দেখুন ভিডিয়ো​

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আমি ফের দ্বিতীয় বার ফোন করি মমতাদিদিকে। বাংলার মানুষের জন্য আমি চিন্তায় ছিলাম। সে জন্য মমতাদিদির সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। কেন না উনি এখানকার মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু দিদি দ্বিতীয় বারেও আমার সঙ্গে কথা বলেননি।’’ মোদী এর পর উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘‘ভেবে দেখুন, রাজনীতি নিয়ে কতটা চিন্তিত উনি! অথচ বাংলার মানুষের জন্য তাঁর কোনও মাথাব্যথা নেই। দেশের মানুষের মঙ্গল নিয়ে রাজনীতি করলে চিরকালই দেশের ক্ষতি হয়েছে। দিদির এমন আচরণের জন্য বাংলার বিকাশে ব্রেক লেগে রয়েছে।”

ফণীর প্রকোপে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে এ দিন সকালেও রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে তিনি বৈঠকে বসতে চেয়েছিলেন বলে দাবি করেন মোদী। কিন্তু তাতেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপত্তি তোলেন বলে অভিযোগ তাঁর। মোদীর দাবি, “ফণীর ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কী ভাবে সাহায্য করবে, তা নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম। স্পিডব্রেকার দিদি তাতেও বাধা দিলেন। তবে, দিদির এই রাজনীতির মধ্যেই বাংলার মানুষকে ভরসা দিচ্ছি আমি, কেন্দ্রীয় সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে।”

আগাম সতর্কতার জন্য ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে ওড়িশায় তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তা নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রশংসিত হয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের ভূমিকা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের প্রশংসাও এ দিন শোনা গিয়েছে মোদীর মুখে।

আরও পড়ুন: লাইভ: ব্যারাকপুরে পুনর্নির্বাচন হওয়া উচিত, দাবি প্রকাশ জাভড়েকরের

তবে মোদীর তোলা প্রশ্নের পাল্টা জবাব শোনা গিয়েছে মমতা মুখে। পশ্চিম মেদিনীপুরের গোপীবল্লভপুরের জনসভা থেকে মোদীর এই অভিযোগ উড়িয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তিনি বলেন, ‘‘আমি কলকাতায় ছিলাম না, যে কলকাতা থেকে আপনার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ ছিল।’’ তিনি অভিযোগ তোলেন, তাঁকে ছাড়াই রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করতে চেয়েছিলেন। তাঁর দাবি, “মুখ্যমন্ত্রীকে ছাড়া মুখ্য সচিব এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদেকর সঙ্গে বৈঠক ডাকার স্পর্ধা দেখান কীভাবে? বাংলায় এ সব নাটক করবেন না। এক্সপায়ারি প্রধানমন্ত্রী আপনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যই নন। আপনার সহানুভূতি চাই না আমাদের।”

মোদী বৈঠকে বসতে চান বলে আগে ভাগে তাঁদের জানানো হয়নি বলেও দাবি করেন মমতা। তিনি জানান, “কলাইকুণ্ডায় মোদীর বিমান নামার পরই বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়। যেন আমরা ওঁর চাকর। উনি লোক দেখানো মিটিং করবেন। সেখানে আমাদের রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তার পর বলবেন বাংলা সরকার সহযোগিতা করেনি। নির্বাচনের সময় আপনার সাথে মঞ্চে উঠব না। এটা মাথায় ঢুকিয়ে নিন। তার কারণ, আপনাকে এখন আর প্রধানমন্ত্রী মানি না। নতুন প্রধানমন্ত্রী হলে তাঁকে বলব।” ‘‘নির্বাচনী প্রচারে রাজ্যে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী, সেই সময় তাঁর সঙ্গে বৈঠক করতে যাবই বা কেন,’’—এমন প্রশ্নও তোলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন