ভোটারদের কাছে রায়গঞ্জ চাইলেন মমতা। ছবি: পিটিআই।
ঋণ চাইলেন রায়গঞ্জ। লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্রে কখনও সাফল্য পায়নি তৃণমূল। ২০১৪-তেও তৃতীয় হয়েছিল। এ বারে এখানকার ভোটারদের কাছে ঋণ চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার রায়গঞ্জ স্টেডিয়ামে কানাইয়ালাল আগরওয়ালের সমর্থনে জনসভায় তিনি বলেন, ‘‘রায়গঞ্জে বারবার কংগ্রেস জেতে, নয় সিপিএম। তারা কোন কাজটা করেছে? এ বার রায়গঞ্জটা দিন। ভিক্ষে নয়, চাইছি ঋণ।’’
তাঁর আবেদন, ‘‘আমি কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ডালখোলা থেকে শুরু করে, করণদিঘি, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া— সকলকে বলব ভোটটা তৃণমূলকে দিন। এ বার লড়াইটা লড়তে হলে লড়ব। করতে হলে করব। কিন্তু মোদীকে ছাড়ব না।’’ মমতার দাবি, বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেস বা সিপিএম লড়ছে না। লড়ছে শুধু তৃণমূল। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা সিপিএম, কংগ্রেসকে এত দিন ভোট দিয়েছেন, তাঁদের কাছে আবেদন করছি। গ্যারেন্টি দিয়ে বলছি, মত বদলান।’’
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিজেপি জেলা সভাপতি নির্মল দামের কটাক্ষ, ‘‘বাংলায় কথা আছে— ঋণ করে ঘি খায়। তো যে জমি সম্পত্তি বন্ধক রেখে ঘি খায়, তা ফেরাতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রীর এই স্বপ্নও সত্যি হবে না।’’ সিপিএমের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অপূর্ব পাল বলেন, ‘‘এটা লোকসভা ভোট। দিল্লি থেকে সুযোগ-সুবিধা আনতে হবে। মহম্মদ সেলিম পাঁচ বছর সেটা করে দেখিয়েছেন।’’
রায়গঞ্জ লোকসভা আসন এক সময় কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি ছিল। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি তো বটেই, পরে তাঁর স্ত্রী দীপাও এখান থেকে জিতে সাংসদ হন। কিন্তু ২০১৪-য় সামান্য ব্যবধানে দীপা হেরে যান সেলিমের কাছে। তৃণমূল হয় তৃতীয়। কংগ্রেসিরা বলছেন, এ বার তৃণমূল আরও নীচে নামবে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর এই আর্তি। তাঁরা বলেছেন, এমস হাসপাতাল না পাওয়ার দুঃখ ভুলতে পারেনি রায়গঞ্জ। তার ফল তো পেতেই হবে তৃণমূলকে। কংগ্রেসের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘তৃণমূল দিবাস্বপ্ন দেখছে। কংগ্রেস এই আসনে ফের জিতছে, মানুষের সমর্থন দেখলেই তা বোঝা যাবে।’’
সোমবার রাতে বৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার জল-কাদা ভেঙে সভার মাঠে আসেন ১৫ হাজার মানুষ। মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, রায়গঞ্জ কি তৃণমূলের হবে? ইতিবাচক জবাবই দেয় জনতা। ভোটের বাক্সে তার প্রতিফলন হবে কিনা তার জন্য অপেক্ষা ২৩ মে অবধি।