আবদার: প্রচারে নিজস্বী। মঙ্গলবার, গাজলে। —নিজস্ব চিত্র
ধামসা-মাদলের তালে মাথায় কলসি নিয়ে নাচছেন আদিবাসী মহিলারা। তাঁদের কায়দাতেই মাথায় কলসি নিয়ে সঙ্গ দিলেন তিনি। কোথাও অভিযোগ শুনলেন গ্রামবাসীদের। মঙ্গলবার নিজের জন্মভিটে গাজল থেকে এ ভাবেই প্রচার শুরু করলেন উত্তর মালদহ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা সাংসদ মৌসম নূর। এ দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কখনও পায়ে হেঁটে, আবার কখনও হুডখোলা জিপে প্রচার করলেন তিনি। প্রথম দিনে কর্মী-সমর্থকদের উচ্ছ্বাস দেখে আপ্লুত মৌসম।
মাস দেড়েক আগেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন টানা দু’বারের সাংসদ মৌসম নূর। দলে যোগ দিয়েই উত্তর মালদহের প্রার্থী হিসেবে সবার প্রথমে তাঁর নাম ঘোষণা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই কর্মী-সমর্থকেরা প্রচার শুরু করে দিয়েছিলেন। কর্মিসভা করলেও তখন প্রচারে জোর দেননি মৌসম। তবে এ দিন নিজে প্রচার শুরু করেন তিনি। আর তা শুরু করে দিলেন গাজল থেকেই। প্রচারের জন্য কেন গাজলকে বেছে নিলেন? মৌসম বলেন, “আমি গাজলের পান্ডুয়ার মেয়ে। আমার বাবার বাড়ি গাজলে। তাই জন্মভিটে গাজল থেকেই গত নির্বাচন গুলিতেও প্রচার শুরু করেছিলাম। এ বারও সেখান থেকেই শুরু করলাম প্রচার।”
এ দিন সকাল সাড়ে নটা নাগাদ গাজলের দেওতলা গ্রামপঞ্চায়েতের ২০ মাইল এলাকায় জমায়েত হন কর্মী-সমর্থকেরা। সেখানেই ধামসা, মাদলের তালে চলে আদিবাসী নাচ। আদিবাসীদের সঙ্গে নিয়ে ২০ মাইল থেকে প্রচার শুরু করেন মৌসম। তার পরে মালদহ-বালুরঘাট জাতীয় সড়ক দিয়ে পাঁচ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলে প্রচার। জাতীয় সড়ক থেকে দেওতলা গ্রামপঞ্চায়েতের ছ’টি বুথে কখনও পায়ে হেঁটে, আবার কখনও হুডখোলা জিপে করে প্রচার করেন তিনি। মৌসমকে দেখতে গ্রামের মোড়ে মোড়ে মহিলারাও ভিড় জমান। খলম্বা গ্রামে মৌসমকে মালা পড়িয়ে দেন ষাটোর্ধ মহিলা মানু হাঁসদা। তবে মৌসমের কাছে গ্রামের বেহাল রাস্তা মেরামতের দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, “আমরা চাই আমাদের গ্রামের রাস্তা পাকা হোক।” খলম্বা গ্রামের মতোই ধামইল, দোয়াশপুর ইত্যাদি গ্রামগুলিতেও চলে প্রচার।
দেওতলা গ্রামপঞ্চায়েতের পাশাপাশি চাকনগর, বাবুপুর গ্রামপঞ্চায়েতেরও প্রচার করেন মৌসম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সৌমিত্র রায়, বিধায়ক দিপালী বিশ্বাস, জয়ন্ত ঘোষ, সুনীল বিশ্বাস, প্রসূন রায় ও সমস্ত গোষ্ঠীর নেতারা। মৌসমের সমর্থনে গাজলের সমস্ত গোষ্ঠীর নেতা-নেত্রীরা প্রচারে সামিল হওয়ায় স্বস্তিতে তৃণমূল শিবির। তবে গাজল থেকে মৌসমের প্রচারকে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী শিবির। বিজেপির জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র বলেন, “মানুষের উন্নয়নের জন্য কোনও কাজই করেননি মৌসম। গাজলে ভিত তাঁর নড়বড়ে। তাই গাজল থেকে প্রচার শুরু করলেন তিনি।” মৌসম বলেন, “এ দিন মানুষের সমর্থন স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে পেয়েছি। আশা করছি মানুষের সমর্থন এ ভাবে মিলবে।”