ফারাকটা প্রায় আকাশ-পাতাল! ঘোষিত দামের সঙ্গে বর্তমান বাজারদরের হিসেব একেবারেই মিলছে না। রায়গঞ্জের দুই প্রার্থী মহম্মদ সেলিম এবং দীপা দাশমুন্সির ব্যক্তিগত সম্পত্তি নিয়ে এমনই বিতর্ক উঠেছে।
মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া খতিয়ানে দেখা যাচ্ছে, দু’জনেরই একাধিক সম্পত্তির ঘোষিত দাম বর্তমান দামের চেয়ে অবিশ্বাস্য ভাবে কম। বামপ্রার্থী সেলিমের হলফনামায় দেখানো হয়েছে, সল্টলেকে তাঁর স্ত্রী রসিনা খাতুনের নামে ৯ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দামে ১২১৯ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। অথচ এখনকার বাজারদরে এটির দাম ৮৫ লক্ষ টাকারও বেশি। স্বাভাবিক ভাবেই ওই খতিয়ান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধীদের একাংশের অভিযোগ, সেলিম মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন। উত্তর দিনাজপুরের জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দের কথায়, ‘‘সাংসদ গত পাঁচ বছরে মানুষকে অনেক মিথ্যে আশ্বাস দিয়েছেন। ফ্ল্যাটের দাম তিনি যা উল্লেখ করেছেন সে বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।’’ খতিয়ানে সেলিম জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রীর নামে আর একটি ফ্ল্যাট রয়েছে শিলিগুড়িতে। বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী ৭৩৭.১৬ বর্গফুটের ওই ফ্ল্যাটের দাম দেখানো হয়েছে ১২ লক্ষ টাকা। অথচ ২০১৪ সালে এটি কেনা হয়েছিল ১৭ লক্ষ ৪০ হাজার ৩৮০ টাকায়। এই দাম নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, ওই এলাকায় ওই আয়তনের ফ্ল্যাটের দাম ১২ লক্ষের অনেক বেশি। যদিও দু’টি ফ্ল্যাট নিয়ে সেলিমের দাবি, ‘‘সল্টলেকের ফ্ল্যাটটির নির্মাণ অসম্পূর্ণ। ১০ বছরের মধ্যে সেই কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় তার নকশাও বাতিল হয়ে গিয়েছে। নতুন নকশায় নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হলে তখন বর্তমান দাম মিলতে পারে।’’ তিনি জানান, শিলিগুড়ির ফ্ল্যাটটি ব্যাঙ্ক ঋণে কেনা। তাই ঋণের যে অংশ বকেয়া, তা বাদ দিয়েই দাম লেখা হয়েছে।
কংগ্রেস প্রার্থী দীপা হলফনামায় জানিয়েছেন, কলকাতার রসা রোডে তাঁর প্রয়াত স্বামী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির নামে একটি বাড়ি রয়েছে ১৫০০ বর্গফুটের। ওই বাড়ির বর্তমান বাজারমূল্য সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা। এটা নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মলের অভিযোগ, ‘‘ওই বাড়ির বর্তমান বাজারমূল্য ৭০ থেকে ৮০ লক্ষ টাকা হওয়া উচিত।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের কথায়, ‘‘কলকাতার রসা রোডের মতো জায়গায় ১৫০০ বর্গফুটের বাড়ির বর্তমান বাজারমূল্য অনেক বেশি হওয়া উচিত।’’
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এই বিষয়ে দীপার বক্তব্য, ‘‘পুরনো বাড়ির সঙ্গে নতুন বাড়ির বর্তমান বাজারদর গুলিয়ে ফেললে চলবে না। আমি আইন মেনেই মনোনয়নের সঙ্গে পেশ করা হলফনামায় সমস্ত তথ্য দিয়েছি।’’