‘জয় শ্রীরাম’ বিতর্ক উস্কে দিলেন প্রধানমন্ত্রী

দু’দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ের সামনে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়ায় বিজেপির তিন জনকে আটক করেছিল রাজ্যের পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৯ ০৫:২১
Share:

হলদিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।

ঘটনা দু’দিন আগের। প্রচারে রাজ্যে পা রেখে সেই ‘জয় শ্রীরাম’ প্রসঙ্গ উস্কে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

দু’দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ের সামনে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়ায় বিজেপির তিন জনকে আটক করেছিল রাজ্যের পুলিশ। সোমবার হলদিয়া ও ঝাড়গ্রামের জোড়া সভায় মমতাকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলে অভিবাদন জানিয়ে মোদী বললেন, ‘‘জয় শ্রীরাম বলায় দিদি লোককে জেলে ঢোকাচ্ছেন। আমারও মনে হল, আমিও দিদিকে সরাসরি জয় শ্রীরাম বললে আমাকেও জেলে ঢুকিয়ে দেবেন। নির্দোষ যাঁরা জেলে রয়েছেন, তা হলে আমি তাঁদের সেবা করতে পারব!’’ সঙ্গে মমতাকে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘রামের কাছে বড় বড় ব্যক্তির অহঙ্কার চূর্ণ চূর্ণ হয়ে গিয়েছে। আপনার অহঙ্কার কোথায় থাকবে?’’

দিন কয়েক আগে একটি নির্বাচনী সভায় মমতা বলেছিলেন, ‘‘রামকে ওরা (বিজেপি) ভোটে এজেন্ট করেছে।’’সেই প্রসঙ্গ টেনে মোদী মমতাকে হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ‘‘বলে দিচ্ছি, রাম আমাদের মাথার উপরে রয়েছেন। সংস্কৃতিতে রয়েছেন। রাম আমাদের প্রজ্ঞা, প্রেরণা। আমাদের রাজনীতির পথ রাষ্ট্রবাদ।’’

Advertisement

বিষ্ণুপুরের রাধানগরের সভায় মমতাও পাল্টা বলেছেন, ‘‘তুমি ঠিক করবে আমি কী স্লোগান দেব? আমি জয়হিন্দ বলব, বন্দে মাতরম বলব, জয় মা কালী বলব, জয় মা দুর্গা বলব। তুমি যে রাম নাম কর, তা পাঁচ বছরে ক’টা রামের মন্দির করতে পেরেছ? নির্বাচন এলে রামচন্দ্র তোমার পার্টির এজেন্ট হয়ে যায়? তোমার স্লোগান আমি কেন বলব? তুমি বাংলার কালচার ভুলিয়ে দেবে, এত বড় ক্ষমতা?’’ একই প্রসঙ্গে এ দিন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘শ্রীরাম চন্দ্রকে সকলে শ্রদ্ধা করেন। কিন্তু বিজেপি তাঁকে নিয়ে যে ভাবে রাজনীতি করে, তা মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়। মানুষ তা পছন্দও করেন না।’’

ঘটনা হল গত শনিবার চন্দ্রকোনায় যাওয়ার পথে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান শুনে কনভয় দাঁড় করিয়ে নেমে পড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে দেখে কয়েকজন পালাতে শুরু করলে মমতা বলে ওঠেন, ‘‘পালাচ্ছিস কেন? আয়...।’’ এরপর পুলিশ তিন বিজেপি কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। তবে তাঁদের কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাসের পরে সেই রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়। কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। ওই তিনজনকে আটক করে আনার ব্যাখ্যা দিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “এটা ভিভিআইপির নিরাপত্তার বিষয়। মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির সামনে এসে এ ভাবে কিছু বলা যায় না। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। গ্রেফতারের কোনও প্রশ্নই নেই।” সে দিন আটক হওয়া বিজেপির যুব মোর্চার সীতারাম মিদ্যাও মানছেন, “পুলিশ আমার কাছে জানতে চেয়েছিল, কেন জয় শ্রী রাম বলেছিলাম।’’ সীতারামের সংযোজন, ‘‘জয় শ্রীরাম বলার মধ্যে অপরাধটা কোথায়!” বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের দাবি, “মুখ্যমন্ত্রীর ষোলো আনা ইচ্ছে ছিল আমাদের কর্মীদের গ্রেফতার করার। কিন্তু সাহস পাননি।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির পাল্টা বক্তব্য, ‘‘রাম কারও একার নয়, বিজেপি রামকে নিয়ে রাজনীতি করছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement