West Bengal News

নিখোঁজের পিছনে ব্যক্তিগত কারণ? নদিয়ার নির্বাচনী নোডাল অফিসার রহস্যে নয়া সূত্র পেল পুলিশ

পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, অর্ণববাবুর মোবাইলের শেষ টাওয়ার লোকেশন পাওয়া গিয়েছে শান্তিপুর। তার পর থেকেই তাঁর মোবাইল সুইচড অফ হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৯ ১২:১৯
Share:

স্ত্রীর সঙ্গে অর্ণব রায়। ছবি: সংগৃহীত

শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত হদিশ মিলল না নদিয়ার নিখোঁজ নির্বাচনী আধিকারিক অর্ণব রায়ের। যদিও জেলা পুলিশের দাবি তাঁরা অর্ণবের নিঁখোজ হওয়ার বিষয়ে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য সূত্র পেয়েছেন। জেলা পুলিশ সূত্রে এই নিখোঁজের পিছনে অপহরণের সম্ভবনা আপাতত উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে জেলা পুলিশের একটি সূত্র দাবি করেছে শুক্রবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিট নাগাদ এক বার অর্ণবের একটি মোবাইল নম্বর সুইচড অন হয়। কিন্তু কয়েক মিনিটের মধ্যে ফের বন্ধ করে দেওয়া হয় সেই ফোন। পুলিশ অর্ণবের কল রেকর্ডস খতিয়ে দেখে কয়েকটি সূত্র পেয়েছে বলে দাবি জেলা পুলিশের।

Advertisement

অন্যদিকে কমিশন নিযুক্ত রাজ্যের বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক এ দিন কলকাতায় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে বলেন, ‘‘আমরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে প্রতি মূহূর্তে যোগাযোগ রাখছি। তবে এখনও পর্যন্ত তাঁর নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে নির্বাচনের কোনও যোগাযোগ পাওয়া যায়নি।” জেলা পুলিশেরও দাবি, ব্যক্তিগত কারণে তিনি অবসাদে ভুগছিলেন।

কৃষ্ণনগর থেকে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়ে যান নদিয়ার ইভিএম-ভিভিপ্যাটের দায়িত্বে থাকা নির্বাচনী আধিকারিক অর্ণব রায়। বৃহস্পতিবারও নির্বাচনী কাজকর্ম খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিকেল থেকে তাঁর সন্ধান না মেলায় কোতোয়ালি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। নিখোঁজ ঘিরে দানা বেঁধেছে তীব্র রহস্য। নদিয়ার জেলা শাসক সুমিত গুপ্ত জানিয়েছেন, ওই আধিকারিকের সন্ধান পেতে সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছে জেলার পুলিশ-প্রশাসন।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অর্ণব রায় নদিয়া জেলায় একশো দিনের প্রকল্পে কর্মরত। লোকসভা ভোটে তিনি ইভিএম-ভিভিপ্যাট সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন। থাকতেন কৃষ্ণনগরে নদিয়া জেলাশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন সরকারি আবাসনে। তাঁর স্ত্রী অনীতা যশও একশো দিনের প্রকল্পের কর্মী। নদিয়া জেলার ভোটপ্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য অস্থায়ী নির্বাচনী কার্যালয় তৈরি হয়েছে বিপ্রদাস পাল চৌধুরী পলিটেকনিক কলেজে। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে বেরিয়ে ওই পলিটেকনিক কলেজে যান অর্ণববাবু। তার পর বিকেলেও বাড়ি না ফেরায় তাঁর স্ত্রী খোঁজ খবর শুরু করেন। তখনই জানা যায়, তিনি নিখোঁজ। তবে গাড়িটি তখনও পলিটেকনিক কলেজেই ছিল। রাত ১১টা নাগাদ জেলা প্রশাসন এবং পরিবারের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের হয়।

শুরু হয় খোঁজ খবর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পলিটেকনিক কলেজে তাঁর সঙ্গে কাজ করা অন্য কর্মী-অফিসাররা প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছেন, দুপুরের দিকে ফোনে কথা বলতে বলতে হেঁটেই অর্ণববাবুকে কলেজের বাইরে বেরোতে দেখেছেন তাঁরা। দু’-একজন আবার জানিয়েছেন, ফোনে কথা বলার সময় কলেজের পিছনের দিকেও যেতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।

আরও পড়ুন: বিএসপির বদলে বিজেপিতে ভোট! ভুলের শাস্তি দিতে নিজেই কেটে ফেললেন আঙুল

আরও পড়ুন: কচ্ছের রানে যেন গণতন্ত্রের লবণ অভিযান

পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, অর্ণববাবুর মোবাইলের শেষ টাওয়ার লোকেশন পাওয়া গিয়েছে শান্তিপুর। তার পর থেকেই তাঁর মোবাইল সুইচড অফ হয়ে গিয়েছে। ফলে এক দিকে যেমন তীব্র রহস্য দানা বেঁধেছে, তেমনই তদন্তকারী অফিসাররাও ধন্দে পড়েছেন।

জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রে দাবি, নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত কিছু বিষয় নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে সংঘাত হয়েছিল অর্ণববাবুর। সেই কারণে নিখোঁজ কিনা, তাও স্পষ্ট নয়। জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, ‘‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আমরা রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে বিষয়টি জানিয়েছি। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। জেলা প্রশাসনের তরফে ওই অফিসারকে খুঁজে বার করার সব রকম চেষ্টা চলছে।’’

আগামী ২৯ এপ্রিল চতুর্থ দফায় ভোটগ্রহণ কৃষ্ণনগরে। ওই দিন রাজ্যের আরও সাতটি কেন্দ্রে ভোট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন