রাজ্যে আর গণতন্ত্র নেই: মোদী

মোদীর এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাংলায় গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে বলেই ওঁদের নেতারা এখানে এসে যা খুশি বলছেন। ওঁদের রাজ্যে এ সব ভাষা ব্যবহার করলে বিরোধীদের মুন্ডু কেটে নিতেন। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য বাংলার মানুষের অপমান। তিনি সমুচিত জবাব পাবেন।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৯ ০৪:২৯
Share:

দিল্লির রামলীলা ময়দানে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

প্রধানমন্ত্রী থেকে সাধারণ গ্রামপ্রধান, সকলের সঙ্গেই একই রকম জুলুম করছে বাংলার তৃণমূল সরকার, সে রাজ্যে গণতন্ত্র বলে আর কিছু অবশিষ্ট নেই— বুধবার এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘মমতাজি দমনমূলক রাজনীতির শেষ সীমায় পৌঁছে গিয়েছেন। এ ভাবে আর বেশি দিন তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।’’

Advertisement

মোদীর এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাংলায় গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে বলেই ওঁদের নেতারা এখানে এসে যা খুশি বলছেন। ওঁদের রাজ্যে এ সব ভাষা ব্যবহার করলে বিরোধীদের মুন্ডু কেটে নিতেন। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য বাংলার মানুষের অপমান। তিনি সমুচিত জবাব পাবেন।’’

মোদী এ দিন অভিযোগ করেন, ভোটের আগে বিরোধীদের সভা পর্যন্ত করতে দেওয়া হয়নি বাংলায়। নামতে দেওয়া হয়নি হেলিকপ্টার। সভাস্থলের ২০০ কিমির মধ্যে মাইক, প্যান্ডেলওয়ালাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে, যাতে বিজেপির সভায় কেউ অংশ নিতে না পারেন। মোদীর দাবি, মঞ্চ তৈরির জন্য ৫০০ কিমি দূর থেকে লোক জোগাড় করে আনতে হয়েছে রাজ্য নেতৃত্বকে। পার্থবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘গণতন্ত্র রক্ষার জন্য ভোটে সচিত্র পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক হয়েছিল মমতার আন্দোলনের ফলে। তাঁর দিকে যাঁরা আঙুল তুলছেন, তাঁরা ইতিহাসে গণতন্ত্র ও মানবতা হত্যার দায়ে অভিযুক্ত থাকবেন।’’

Advertisement

মোদী অবশ্য এ দিন বাংলার সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরের আইন-শৃঙ্খলার তুলনা টেনে অভিযোগ করেন, ‘‘ভোটের সময় মিডিয়ার চোখ থাকে জম্মু-কাশ্মীরের দিকে। কারণ সেখানে ‘হিংসা’র আশঙ্কা থাকে। কিন্তু গত পঞ্চায়েত ভোটে সেখানেও কারও মৃত্যু হয়নি। পশ্চিমবঙ্গে হয়েছে। আমাদের অসংখ্য কর্মী নিহত হয়েছেন।’’ শুধু তাই নয়, মোদীর অভিযোগ, এ পর্যন্ত লোকসভা নির্বাচনে কোনও রাজ্য থেকে অশান্তির খবর আসেনি। কিন্তু প্রত্যেক দফাতেই বাংলা থেকে একাধিক অভিযোগ আসছে। কারণ মমতার সরকার গণতান্ত্রিক নির্বাচনেও শক্তিপ্রদর্শনের চেষ্টা করছেন। যদিও মোদীর দাবি, এ ভাবে জিততে পারবে না তৃণমূল।

পার্থবাবুর জবাব, ‘‘মোদীর আমলেই কাশ্মীরে সব চেয়ে বেশি জঙ্গি হানা হয়েছে, সেনার মৃত্যু হয়েছে। সেখানে গণতন্ত্র ধ্বংস করার পিছনে একমাত্র অভিযুক্ত বিজেপি।’’

রাজ্যে একাধিক সভা করেছেন মোদী। আজ, বৃহস্পতিবারও আসার কথা তাঁর। সব সভা থেকেই মমতার সরকারকে ‘অগণতান্ত্রিক’ বলে আক্রমণ করছেন তিনি। তুলে আনছেন ‘জয় শ্রীরাম’ প্রসঙ্গ। এ দিনও মোদীর অভিযোগ, ‘‘কয়েকজন যুবক জয় শ্রীরাম বলায় তাদের দমন করেছে রাজ্য সরকার। মমতাজির রাম নামেও আপত্তি। অথচ মহাত্মা গাঁধীও জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত রাম নাম করেছেন।’’ তাঁর বক্তব্য, দুর্গাপুজো থেকে সরস্বতী পুজো— সমস্ত ক্ষেত্রেই ‘দমনে’র রাজনীতি করছেন মমতা। অথচ বিদ্বজ্জনেরা সে দিকে তাকান না। তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য মোদী বিরোধিতা। সভা থেকেই মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির এই অভিযোগের জবাব একাধিকবার দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মোদী সারা ক্ষণ মিথ্যে বলেন। এক জন প্রধানমন্ত্রীর মুখে এত মিথ্যে শোভা পায় না। বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। আর বিজেপির শিখিয়ে দেওয়া স্লোগান, আমরা বলি না।’’

এ দিনই পৃথক এক সাক্ষাৎকারে মোদী অভিযোগ করেন, ‘‘মমতা দেশের প্রধানমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মানেন না। তাঁর কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পাক প্রধানমন্ত্রী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন