প্রার্থীপদ নিশ্চিত ধরে ছবি তুলিয়ে রাখেন পার্থ

২০১৪ সালে কোচবিহারের সাংসদ হন রেণুকা সিংহ। সেই সময়ও পার্থর নাম সাংসদের টিকিট পাওয়ার আলোচনায় উঠে এসেছিল। বিশেষ করে দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর অনুগামীরা তখন পার্থের হয়ে সওয়াল করেন।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০৮:০৪
Share:

করজোড়ে: এই ছবিই তোলান পার্থপ্রতিম। নিজস্ব চিত্র

তিনি নিশ্চিত ছিলেন, প্রার্থী এ বার তাঁকেই করছেন দলনেত্রী। তাই করজোড়ে ছবি উঠিয়ে রেখেছিলেন প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার ঠিক দু’দিন আগে। ওই ছবিতেই তৈরি হওয়ার কথা ছিল ফ্লেক্স-হোর্ডিং। তিনি কোচবিহারের বিদায়ী সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য দল আর তাঁকে প্রার্থী করেনি। তাঁর জায়গায় প্রার্থী হয়েছেন ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে সদ্য দলে যোগ দেওয়া বাম আমলের মন্ত্রী পরেশ অধিকারী। ওই ছবি আর নেওয়া হয়নি বিদায়ী সাংসদের। ওই বিষয়ে অবশ্য পার্থ কোনও কথা বলতে চাননি। তিনি আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতেই তিনি সহমত। বৃহস্পতিবার দলীয় প্রার্থী পরেশের হয়ে প্রচারে নেমেছেন, দেওয়ালও লিখেছেন তিনি। তাঁর অনুগামীরা অবশ্য এখনও ভেবে উঠতে পাচ্ছেন না, ঠিক কোথায় তাঁর খামতি ছিল।

Advertisement

২০১৪ সালে কোচবিহারের সাংসদ হন রেণুকা সিংহ। সেই সময়ও পার্থর নাম সাংসদের টিকিট পাওয়ার আলোচনায় উঠে এসেছিল। বিশেষ করে দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর অনুগামীরা তখন পার্থের হয়ে সওয়াল করেন। তখন রাজ্য নেতৃত্ব অবশ্য জেলায় একজন মহিলা প্রার্থী চেয়েছিলেন। ২০১৬ সালে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় রেণুকা দেবীর। উপনির্বাচনে প্রার্থী করা হয় রবীন্দ্রনাথের অনুগামী এবং অত্যন্ত স্নেহভাজন পার্থকে। তাঁর সাংসদ হওয়ার পিছনে যে রবীন্দ্রনাথই সব থেকে বেশি আগ্রহী ছিলেন, এখন তা জানতে আর কারও বাকি নেই। সাংসদ হিসেবে ছয় মাস কাটাতে না কাটাতেই সেই রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন পার্থ। দল তাঁকে যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেয়। যুব ও মূল তৃণমূলের গন্ডগোলে গোটা জেলা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ধীরে ধীরে জেলা রাজনীতিতে রবীন্দ্রনাথের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসেবে নাম উঠে আসে পার্থপ্রতিম রায়ের। তাঁর সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে দলে রবীন্দ্রনাথ-বিরোধী বলে পরিচিত বিধায়ক মিহির গোস্বামী এবং উদয়ন গুহের।

দলের একটি অংশ মনে করছে, রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে বিরোধিতা চরম জায়গায় পৌঁছলেও সংসদে একাধিক বিষয়ে সওয়াল করা থেকে শুরু করে সাংসদ কোটার টাকা খরচ এবং রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে সুসম্পর্কের জেরে তিনিই প্রার্থী হবেন বলে ধরে নিয়েছিলেন পার্থ। শুধু তাই নয়, রবীন্দ্রনাথ-বিরোধী বলে পরিচিত বিধায়করা তাঁর হয়ে সওয়াল করবেন বলেও তিনি ধরে নিয়েছিলেন। এ সব অঙ্কের ভিত্তিতেই টিকিট নিশ্চিত বলে ধরে নেন পার্থ। তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। জনসংযোগের পাশাপাশি ছবি তুলে রেখেছিলেন পোস্টার-ফ্লেক্স-ফেস্টুনের জন্য। উদয়ন বলেন, “দল পরেশ অধিকারীকে প্রার্থী করেছে। তাঁর হয়ে প্রচার শুরু করা হয়েছে। দলের সিদ্ধান্ত মেনেই সবাই কাজ করবে।” মিহির বলেন, “দলনেত্রী যাঁকে প্রার্থী করেছেন তিনি আমাদের প্রার্থী। আমি মনে করি ৪২টি কেন্দ্রেই প্রার্থী আমাদের দলনেত্রী। কোথাও বিরূপ মানসিকতার অবকাশ নেই। প্রার্থীকে বিপুল ভোটে জয়ী করানোই আমাদের লক্ষ্য।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন