চার মূর্তি, কৃষ্ণনগর।
পরিবেশ নিয়ে নাগরিক আন্দোলন হয়। কিন্তু দেশে গণতন্ত্রের বৃহত্তম যজ্ঞে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে পরিবেশ কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেই প্রশ্ন বারবার উঠেছে। শনিবার কলকাতায় সেই প্রশ্ন নিয়েই রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হলেন পরিবেশকর্মীরা।
এ দিন অনুষ্ঠানের শুরুতেই আয়োজক সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সম্পাদক নব দত্ত বলেন, এত বড় নির্বাচনের প্রাক্কালে বায়ুদূষণ, শব্দ দূষণ, নদী দূষণ, জঞ্জাল অপসারণ নিয়ে প্রচার দেখা যাচ্ছে না। অথচ, গণমাধ্যমে এবং সমাজে এর প্রভাব ক্রমশ বাড়ছে। সবুজ মঞ্চ জানিয়েছে, গত পাঁচ বছরে রাজ্যের সাংসদেরা সংসদে মাত্র ১৯৭টি পরিবেশ সংক্রান্ত প্রশ্ন করেছেন।
তৃণমূলের নেতা এবং রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘ইস্তাহারেই বলে দেওয়া মানেই সব নয়। আসল কথা তা বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না!’’ তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জল সংরক্ষণ, সবুজায়নের কাজ হয়েছে। পরিবেশ সংক্রান্ত গবেষণার জন্য পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির সংস্কার হয়েছে।
কংগ্রেস নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্র জানান, তাঁদের ইস্তাহারে বলা হয়েছে, পরিবেশ সংক্রান্ত বিধি আরোপণে ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’র হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেওয়া হবে। নদীগর্ভ থেকে বালি তোলা নিষিদ্ধ, বায়ুদূষণকে দেশের জনস্বাস্থ্যে জাতীয় আপৎকালীন পরিস্থিতি বলে ঘোষণা-সহ একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। সিপিএম নেতা শ্রীদীপ ভট্টাচার্য জানান, তাঁদের ইস্তাহারে উপকূলীয় বিধি কঠোর করা, নির্বিচারে মাছ ধরা বন্ধ করা, জাতীয় জল ব্যবহার নীতি প্রণয়ন-সহ একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এ সব শুনেও পরিবেশকর্মীদের অনেকেই আশ্বস্ত হচ্ছেন না। তাঁদের বক্তব্য, ভোটের আগে অনেক প্রতিশ্রুতি মেলে। কিন্তু তার ক’টা বাস্তবায়িত করা হয়! সবুজ মঞ্চের এক সদস্য অবশ্য বলছেন, ‘‘ভোটের আগে নেতারা নাগরিক সমাজের সঙ্গে পরিবেশ নিয়ে আলোচনায় বসছেন, এমন দৃশ্য আগে দেখা যায়নি। এই রীতি শুরু অন্তত হল। তবে এখনও অনেক পথ হাঁটা বাকি।’’