দীপার জন্য কী পথ, খোঁজ রাহুলের

সূত্রের খবর, বিকল্প সূত্রের মধ্যে উঠে আসছে রায়গঞ্জে দাঁড়ানোর দাবি ছেড়ে দিলে দীপাকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করার আশ্বাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯ ০৪:১৭
Share:

রাহুল গাঁধী

জট পাকিয়ে আছে রায়গঞ্জেই। বাংলার কংগ্রেস নেতৃত্ব নিষ্পত্তির কোনও পথ বার করতে না পারার কথা দলের সর্বভারতীয় সভাপতিকে জানিয়ে দিলেন। শেষ পর্যন্ত সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে কথা বলে সূত্র খোঁজার চেষ্টায় নামলেন রাহুল গাঁধীই।

Advertisement

রাজ্যের নেতাদের কথা শোনার পরে বুধবার সিপিএমের সঙ্গে আলোচনার রাস্তা নতুন করে খুলেছেন রাহুল। ফের তাঁর বার্তা বিনিময় হয়েছে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরির সঙ্গে। রাতে গৌরবকে ইয়েচুরির কাছে পাঠিয়েওছিলেন রাহুল। সিপিএমের এক কেন্দ্রীয় নেতার কথায়, ‘‘আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত পরিষ্কার। সেখান থেকে পিছিয়ে এসে রায়গঞ্জ বা মুর্শিদাবাদ যে ছাড়া যাবে না, তা আবার ওঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিছু বিকল্প প্রস্তাব ঘুরছে। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস কী করে।’’

সূত্রের খবর, বিকল্প সূত্রের মধ্যে উঠে আসছে রায়গঞ্জে দাঁড়ানোর দাবি ছেড়ে দিলে দীপাকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করার আশ্বাস। আগামী বছর বাংলা থেকে রাজ্যসভার যে কয়েকটি আসন ফাঁকা হবে, তার মধ্যে বিরোধীরা একটি পাবে। সেই আসনে সিপিএম সমর্থনে দীপা কংগ্রেস টিকিটে রাজ্যসভায় যেতে পারেন, বিনিময়ে এখন রায়গঞ্জ সিপিএমের মহম্মদ সেলিমকে ছেড়ে দিতে হবে— এমন ভাবনা নিয়ে চর্চা চলছে দু’দলের অন্দর মহলে। প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদ নিয়ে অধীর চৌধুরীকে ডেকে কথা বললেও রাহুলের কাছে দীপার ডাক এখনও পড়েনি। কংগ্রেস সভাপতি যা শুনেছেন, দলের রাজ্য নেতাদের মারফতই।

Advertisement

রাহুলের তুঘলক রোডের বাড়িতে এ দিন তাঁর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, প্রদেশ সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং রাজ্যের অন্যতম কার্যকরী সভাপতি শঙ্কর মালাকারের। বৈঠকে ছিলেন বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা গৌরব গগৈ ও সহ-পর্যবেক্ষক বি পি সিংহ। সনিয়া গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কা বঢরার সঙ্গেও এক ঝলক দেখা হয়েছে বাংলার নেতাদের। রাহুলকে বাংলার কংগ্রেস নেতারা জানিয়েছেন, বামেদের সঙ্গে তাঁরা খোলাখুলি ‘জোট’ চান। কোনও ‘লুকোচুরি’ নয়! তবে তার চেয়েও বড় কথা, গত বার সিপিএমের জেতা দুই আসন রায়গঞ্জ ও মুর্শিদাবাদে প্রার্থী দেওয়ার দাবি দলের মধ্যে জোরালো এবং সোমেনবাবুদের পক্ষে তা অস্বীকার করা সম্ভব হচ্ছে না।

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য রাহুলেরই মুখাপেক্ষী হয়ে আছেন সোমেনবাবুরা। কিন্তু সমঝোতা করতে গিয়ে সিপিএমের জেতা আসন তাঁরা চাইছেন কেন? রাহুলের সঙ্গে বৈঠকের পরে সোমেনবাবু বলেন, ‘‘রায়গঞ্জের সঙ্গে কংগ্রেসের একটা আবেগ জড়িত। মুর্শিদাবাদে এখন তৃণমূল এবং সিপিএম ছেড়ে লোকজন কংগ্রেসে আসছে। সিপিএমে কেউ যাচ্ছে না।’’ ওই দু’টি আসনে চতুর্মুখী লড়াই করে বাকি জায়গায় সমঝোতা করতেও তাঁদের আপত্তি নেই বলে সোমেনবাবুর মত। যদিও জেতা আসন ছেড়ে দিয়ে সমঝোতায় যেতে প্রবল আপত্তি আছে সিপিএমের অন্দরে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘এখন জোট না করলে ওদের ক্ষতি। আমাদের লাভ বা ক্ষতি কিছুই নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন