অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য এ বার বিশেষ ব্যবস্থা ভোটকেন্দ্রে

এই সমস্যা এড়াতে এ বার অন্তঃসত্ত্বা কিংবা শিশু কোলে আসা মায়েদের ভোটদানের জন্য আলাদা ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এমন মহিলাদের এ বার ভোটের লাইনেই দাঁড়াতে হবে না।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৫১
Share:

শিশুদের নিয়ে ভোট দিতে আসা মায়েদের জন্যেই এ বার বিশেষ ব্যবস্থা থাকছে ভোটকেন্দ্রে। ফাইল চিত্র

একেই অসহ্য গরম, তার উপরে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে প্রতীক্ষা। বয়স্করা তো বটেই, কোলে বাচ্চা, অন্য হাতে আর এক ছেলেকে নিয়ে ভোটের লাইনে ঘামতে দেখা যায় অনেক মহিলাকেই। প্রচণ্ড দাবদাহে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে অসুস্থ হয়ে পড়াটাও যেন নির্বাচনের দিনে স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন অবস্থায় ভোটদানের ঝুঁকি নিতে চান না অন্তঃসত্ত্বারাও।

Advertisement

এই সমস্যা এড়াতে এ বার অন্তঃসত্ত্বা কিংবা শিশু কোলে আসা মায়েদের ভোটদানের জন্য আলাদা ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এমন মহিলাদের এ বার ভোটের লাইনেই দাঁড়াতে হবে না। সরাসরি কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন তাঁরা। প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে থাকবে একটি করে আলাদা ঘর। সেই ঘরে গিয়ে বিশ্রাম নিতে পারবেন মহিলারা। সেখানে তাঁরা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের কাছে কোলের সন্তানকে রেখে পাশের বুথে ভোট দিতে পারবেন। ভোট দিতে তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধে না হয়, তা দেখার দায়িত্বে থাকবেন অতিরিক্ত এক জন পোলিং অফিসারও। ছোট বাচ্চাদের রাখার ব্যবস্থা হিসেবে সেখানে দোলনা আর খেলনাও রাখা থাকবে কিছু ভোটদান কেন্দ্রে। মহিলাদের বসার ব্যবস্থা, পাখা, খাওয়ার জল রাখা থাকবে। কোনও মহিলা অসুস্থ বোধ করলে, তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হবে।

আগামী ৬ এবং ১৯ মে দু’দফায় পাঁচটি সংসদীয় এলাকায় ভোট হবে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। এই জেলায় মোট ৮৪৬৮টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ৭৫ লক্ষ ৯৪ হাজার ৩৯১ জন ভোট দেবেন। যার মধ্যে মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৩৭ লক্ষ ২৪ হাজার ১৪১ জন। সেখানেও প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রেই একটি করে আলাদা ঘর রাখা হবে জানিয়ে জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘অন্তঃসত্ত্বারা প্রয়োজনে ওই বিশেষ ঘরে বিশ্রাম নিতে পারবেন। সঙ্গে শিশুদের রেখে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা তো থাকছেই।’’ বৃদ্ধ, বৃদ্ধা, অসুস্থ মানুষ এবং শারীরিক ও মানসিক ভাবে বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জন্যও আলাদা ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

ভোটে কিছুটা উৎসবের চেহারাও নেয় গ্রাম-মফস্‌সল। সেখানে বাড়ির কাজকর্ম সেরে মহিলারা দল বেঁধে ভোট দিতে কেন্দ্রে আসেন। শিশু কোলে ভোটের লাইনে এতদিন দাঁড়াতে হত তাঁদের। ফলে বেলার দিকে লাইন বাড়ে। এর মধ্যে ইভিএম বিকল হলে কিংবা এলাকায় গোলমাল বাধলে সেই লাইন আরও দীর্ঘ হয়। সে সব সমস্যার জন্য ভুগতে হত মহিলা-শিশুদের।

অন্তঃসত্ত্বারা অনেক ক্ষেত্রেই এই সব অসুবিধের কথা ভেবে আর ভোট দিতে আসার ঝুঁকি নিতেন না। এই খবর জানার পরে বারাসতের এক স্কুল শিক্ষিকা জানালেন, ‘‘গরমের মধ্যে ভোটের লাইনে অনেক ক্ষণ দাঁড়াতে হয়। তাই ভেবেছিলাম এ বার আর ভোট দিতে যাওয়া হবে না। মন খারাপ হচ্ছিল। কিন্তু অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য এমন ব্যবস্থা থাকলে অবশ্যই ভোট দিয়ে আসব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন