অজয় নায়েক
ভোটের সময় বিশেষ পর্যবেক্ষককে ‘বিশেষ’ দায়িত্ব দিয়ে রাজ্যে পাঠায় নির্বাচন কমিশন। এ রাজ্যে আসা বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় ভি নায়েকের কী দায়িত্ব, তা নিয়ে প্রকাশ্যে কিছুই বলেননি কমিশন-কর্তারা। কিন্তু ঘটনাপ্রবাহই বলছে, রাজ্যের ভোট পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনিই ‘সর্বেসর্বা’। সিইও-র ভূমিকা নিছক আনুষ্ঠানিক।
বুধবার বেশি রাতে শহরে পা রাখেন নায়েক। বৃহস্পতিবার সাত সকালেই পৌঁছে যান নেতাজি সুভাষ রোডের রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের (সিইও) দফতরে। সেখানে কয়েক ঘণ্টা কাটিয়ে ফিরে যান কলকাতা বন্দরের অতিথিশালায়। ফের সিইও দফতরে এসে বিকেলে সেখান থেকে বেরিয়ে যান। শুক্রবার সকাল সওয়া দশটা নাগাদ সিইও দফতরে আসেন নায়েক। দুপুরে এক বার বেরোলেও ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে আবার ফিরে আসেন। ছিলেন সন্ধ্যা পর্যন্ত। এই দু’দিনের প্রায় সবটা সময়ই রাজ্যের সিইওর চেম্বারে কাটিয়েছেন বিহারের প্রাক্তন সিইও। ভোটের আগে বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবেকে নিয়ে বিভিন্ন জেলায় যেতে চান নায়েক। সে জন্য রাজ্যের কাছে হেলিকপ্টারও চাওয়া হয়েছে।
বিভিন্ন দফার আগে বা পরে কেন্দ্রীয় বাহিনী কোথায় কত থাকবে, তা কার্যত এড়িয়ে গিয়েছিলেন সিইও দফতরের কর্তারা। তাঁরা বক্তব্য ছিল, নিরাপত্তার বিষয়টি অভ্যন্তরীণ। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহারের তথ্য নির্দিষ্ট ভাবে বলা হচ্ছে না। নায়েক কিন্তু শুক্রবার তৃতীয় দফার নির্বাচনের জন্য কত বাহিনী ব্যবহার হবে, তা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন।
কমিশনের একাংশের মতে, নির্বাচন পরিচালনায় আমজনতার আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণেই সংবাদমাধ্যমকে সঠিক ভাবে তথ্য দেওয়া প্রয়োজন। তা নিয়ে টালবাহানা করলে আদতে ভোটাররাই অন্ধকারে থাকেন। গত দু’দিনে সেই বিভ্রান্তি কাটানোর কাজটাই করেছেন বিশেষ পর্যবেক্ষক। এমনকি, তৃতীয় দফায় বাহিনী বাড়ানো নিয়ে কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় করছেন ১৯৮৪ ব্যাচের এই আইএএস অফিসার। কয়েকদিন আগে সিইও ঘরের মেঝেতে বসে ধর্না দিয়েছিলেন বিজেপি নেতারা। সে ঘটনায় কমিশনে রিপোর্ট পাঠানো নিয়েও সিইও’র সঙ্গে টানাপড়েন হয় দফতরের অন্য অফিসারদের।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, বিভিন্ন ঘটনাতেই প্রমাণ মিলেছে সিইও’র ভূমিকা প্রশ্নাতীত নয়। বরং কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক তাঁর ‘বিশেষ’ দায়িত্ব সিইও-র ঘর থেকেই পালন করছেন। যা রাজ্যের ভোট পরিচালনারই সমতুল।