বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ তথা এ বারের তৃণমূল প্রার্থী মমতাজ সংঘমিতার দেওয়াল লিখনে বানান বিভ্রাট। বেনাচিতির সিকন গলিতে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
২০১৪-র লোকসভা ভোট। বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী মমতাজ সংঘমিতা। সে বার বর্ধমানে ভোট-প্রচারে পা দিয়েই তিনি দলীয় কর্মীদের কাছে অনুরোধ করেছিলেন, তাঁর নাম যেন ‘মমতাজ সংঘমিতা’ লেখা হয়। একই অনুরোধ করেছিলেন দুর্গাপুরে এসেও। অনুরোধের কারণ, দেওয়াল লিখন হোক বা পোস্টার, ব্যানার, বহু জায়গাতেই সংঘমিতার জায়গায় ‘সংঘমিত্রা’ লেখা। ওই বছর এই কেন্দ্র থেকেই সাংসদ হন মমতাজ।
২০১৯-র লোকসভা ভোট। এ বারেও তৃণমূলের প্রার্থী একই। কিন্তু এ বারেও ‘সংঘমিতা’র পাশাপাশি, বহু জায়গাতেই জ্বলজ্বল করছে সংঘমিত্রা।
মঙ্গলবার, তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে দুর্গাপুরের নডিহা এলাকায় দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে যায়। কিন্তু, সেই লিখনে যথারীতি সংঘমিতার জায়গায় লেখা হয়, ‘সংঘমিত্রা’। তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই দেওয়াল লিখনে তুলি ধরতে দেখা গিয়েছে দুর্গাপুর পুরসভার ৪ নম্বর বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বৃহস্পতিবার সকালে বেনাচিতির সিকন গলিতে গিয়েও একই ছবি নজরে এসেছে। ওই সময় এলাকা দিয়ে মেয়র পারিষদ রাখি তিওয়ারি, তৃণমূলের দুর্গাপুর ২ ব্লক সভাপতি শরবিন্দু বিশ্বাসেরা প্রচারে বেরিয়েছিলেন। দেওয়াল লিখছিলেন দলীয় কর্মীরা। রাখিদেবীও দেওয়াল লিখনে হাত দেন। কিন্তু সাংসদের দেওয়াল লিখনের প্রমাদ বদলাল না।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
শুধু একটা বা দু’টো দেওয়াল নয়, দুর্গাপুরের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে দেখা গিয়েছে বহু জায়গাতেই এই ‘প্রমাদ’। পোস্টার, ব্যানারেও একই ঘটনা। শুধু পোস্টার, ব্যানার বা দেওয়াল লিখন নয়। শহরবাসীর একাংশও সাংসদের নাম ‘মমতাজ সংঘমিত্রা’ বলেই জানেন বলে দাবি অনেকের। দুর্গাপুরের একটি কলেজ পড়ুয়াদের আড্ডায় গিয়ে বিদায়ী সাংসদের নাম জিজ্ঞাসা করতেই তাঁরা উত্তর দিলেন, ‘মমতাজ সংঘমিত্রা’। ঘটনাচক্রে, ২০১৪-য় পূর্ব বর্ধমানের মেমারির সাতগাছিয়ায় ভোট প্রচারে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রার্থীর নাম ‘মমতাজ সংঘমিত্রা’ই বলেছিলেন, জানান তৃণমূলকর্মীদের একাংশ।
সাংসদ জানান, ‘সংঘমিতা’ এই নামটি রেখেছিলেন তাঁর বাবা সিপিএম নেতা তথা বিধানভার প্রাক্তন স্পিকার প্রয়াত সৈয়দ মনসুর হবিবুল্লাহ। প্যান কার্ড-সহ যাবতীয় কাগজপত্রেও ‘সংঘমিতা’, এই নামই রয়েছে বলে জানান সাংসদ।
কিন্তু বহুবার আপত্তি জানানো সত্ত্বেও এমন প্রমাদ প্রসঙ্গে কী বলবেন, জানতে চাওয়া হলে সাংসদ বলেন, ‘‘নতুন করে কী আর বলব! কতবার কত জায়গায় বলেছি। তবু অনেকেই এখনও গোলমাল করে ফেলেন।’’ বিষয়টি নিয়ে দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রার্থীর নাম যাতে ঠিক ভাবে লেখা হয়, সে বিষয়ে দলের কর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছি।’’