নির্বাচনী প্রচারে অনুপম হাজরা।
যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অনুপম হাজরার সমর্থনে মার্কিন নাগরিক ‘গ্রেট খলি’ প্রচার করায় ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাল তৃণমূল। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে রবিবার তৃণমূলের জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ভোটের প্রচার এবং মনোনয়নে বিদেশি নাগরিককে নিয়ে আসায় অনুপমের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
অনুপম শুক্রবার মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময় তাঁর সমর্থনে রোড শো করেন পালোয়ান ( রেসলার) খলি। অনুপম মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়েও খলি তাঁর পাশে ছিলেন। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এ দিন বলেন, ‘‘কী ভাবে এক জন মার্কিন নাগরিক বিজেপি প্রার্থীর মনোনয়ন পেশের সময় হাজির থাকলেন? নির্বাচন কমিশনের কাছে এই প্রশ্নই জানতে চাওয়া হয়েছে। কমিশন কী পদক্ষেপ করে, দেখা যাক!’’ কমিশন সূত্রের খবর, খলি-কাণ্ডের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
অনুপম এবং বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায় অবশ্য দাবি করেছেন, খলিকে নিয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় আইন ভাঙা হয়নি। অনুপম বলেন, ‘‘কোনও আইন ভঙ্গ হয়নি। ঠিক সময়ে আমরা প্রয়োজনীয় নথি পেশ করব।’’ আরও এক ধাপ এগিয়ে এ দিন সংবাদমাধ্যমকে অনুপম আরও বলেন, ‘‘খলি তো হরিয়ানা পুলিশে চাকরি করেন!’’ কিন্তু পুলিশ বিভাগে কর্মরত এক জন সরকারি কর্মী কী ভাবে রাজনৈতিক দলের প্রচারে অংশ নিলেন, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। অনুপম বলেন, ‘‘এ বিষয়ে এখন আর কিছুই বলব না। যথাসময়ে উপযুক্ত নথি পেশ করব।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মুকুলবাবুর বক্তব্য, ‘‘এ ক্ষেত্রে ওভারসিজ সিটিজেন আইনের অন্যথা হয়নি। খলি কোনও নিয়মভঙ্গ করেননি।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আগেই জানিয়েছিলেন, ‘‘খলি প্রথমে ভারতীয়, তার পরে তিনি মার্কিন নাগরিকত্ব নিয়েছেন। প্রবাসী ভারতীয়দের (এনআরআই) ভোটাধিকার থাকে, তাঁরা হয়তো ভোটে দাঁড়াতে পারেন না।’’ সূত্রের খবর, ওভারসিজ সিটিজেন সংক্রান্ত আইনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং ভোটাধিকার নিয়ন্ত্রিত আছে। সে ক্ষেত্রে দেশে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তিনি অংশ নিতে পারেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে তৃণমূলের রায়গঞ্জ লোকসভার প্রার্থী কানাইয়ালাল অগ্রবাল এবং দমদমের প্রার্থী সৌগত রায়ের সমর্থনে যথাক্রমে ফেরদৌস আহমেদ এবং গাজী নুর প্রচারে আসায় বিতর্ক হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল তাঁদের। তখন যারা বিষয়টি নিয়ে হইচই করেছে, খালি-কাণ্ডে অভিযুক্ত সেই বিজেপি-ই।