জেলার ছেলেদের ফাঁসানো হয়েছে, নালিশ

গলসির গোহগ্রাম এলাকার তিন যুবক অর্জুন ঘোষ, অজয় বাগদি, শ্রীমন্ত রানা এই মুহূর্তে কলকাতার জোড়াসাঁকো থানার হেফাজতে রয়েছেন। প্রত্যেকেরই বয়স ২২ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গলসি ও কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৯ ০১:৫৯
Share:

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের ‘রোড শো’ চলাকালীন কলকাতায় অশান্তিতে জড়িত সন্দেহে ধৃতদের মধ্যে বেশ কয়েক জন পূর্ব বর্ধমানের যুবক বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার কয়েক জন ধৃতের বাড়ির সদস্যদের প্রত্যেকেই দাবি করলেন, বাড়ির ছেলেরা নির্দোষ। তাঁদের আরও দাবি, ওই যুবকদের কেউ চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত। কেউ বা ছাত্র। বিজেপির অভিযোগ, ওই যুবকদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

Advertisement

গলসির গোহগ্রাম এলাকার তিন যুবক অর্জুন ঘোষ, অজয় বাগদি, শ্রীমন্ত রানা এই মুহূর্তে কলকাতার জোড়াসাঁকো থানার হেফাজতে রয়েছেন। প্রত্যেকেরই বয়স ২২ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিন জনেই মঙ্গলবার সকালে বাসে চড়ে ওই রোড-শোয়ে যোগ দিতে কলকাতা রওনা হন। অজয় গ্রেফতার হয়েছে শুনে তাঁর বাবা স্বপনবাবু দাবি করেন, ‘‘ছেলে চাষাবাদের সঙ্গে যুক্ত। বিজেপির মিছিলে যোগ দিতে গিয়েছিল। কোনও ভাঙচুর, গোলমালে ছেলে জড়িত থাকতে পারে না।’’ একই দাবি অর্জুন ও শ্রীমন্তের পরিবারেরও। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শ্রীমন্তের গয়নার একটি ছোট দোকান রয়েছে। পাশপাশি, চাষাবাদও করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাঁর এক নিকটাত্মীয় বলেন, ‘‘শ্রীমন্তকে ফাঁসানো হয়েছে। ও এই ধরনের কাজ করতেই পারে না।’’ একই দাবি, পেশায় খেতমজুর অর্জুন ঘোষের পরিচিতদেরও। এই তিন যুবকই ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকেই গ্রামে বিজেপির নানা কর্মসূচির সঙ্গে যোগ দেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।

কাটোয়ার খাজুরডিহি গ্রামের পুরোহিত পাড়ার বাসিন্দা, বছর ২৬-এর শুভ্র চট্টোপাধ্যায়ও কলকাতায় পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। পারিবার সূত্রে জানা যায়, কাটোয়া কলেজের প্রাক্তনী শুভ্র বর্তমানে একটি বেসরকারি বিএড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বিজেপি সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান পূর্ব, বোলপুর ও উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি লোকসভা কেন্দ্রে দলের নির্বাচনী কাজে যোগ দিয়েছিলেন এবিভিপি-র জেলা স্তরের প্রাক্তন ছাত্রনেতা শুভ্র। মূলত বুথ কমিটি তৈরির কাজ করেন তিনি। শুভ্রের মা মিতাদেবী জানান, গত ৪মে ‘দলের কাজে যাচ্ছি’ বলে বাড়ি থেকে বেরোন ছেলে। মিতাদেবীর দাবি, ‘‘ছেলে কোনও রকম অশান্তির সঙ্গে যুক্ত নয়। তবে দলের কাজে গিয়েছিল। দল নিশ্চয় ওর পাশে থাকবে।’’ বিজেপির জেলা নেতৃত্বের একাংশের অবশ্য দাবি, এই মুহূর্তে দল বা দলের কোনও শাখা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নন শুভ্র। কিন্তু ‘সুবক্তা’ হওয়ায় তাঁকে দলের নানা কর্মসূচিতে নিয়ে যাওয়া হয়।

Advertisement

তবে এই যুবকদের কথা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির জেলা সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষের দাবি, ‘‘দলের কর্মী বা দলকে ভালবেসে অনেকেই পাশে রয়েছেন। তাঁদের অনেককেই তৃণমূল মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। কিন্তু দল এই যুবকদের সব রকম সহযোগিতা করবে। সঙ্গে থাকবে।’’ তৃণমূলের জেলা নেতা তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডুর বক্তব্য, ‘‘আইন আইনের পথে চলছে। বিশৃঙ্খলা করলে পুলিশ তো গ্রেফতার করবেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন