অধীর রঞ্জন চৌধুরী
কখনও প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ, কখনও শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী। নির্বাচনের নির্ঘন্ট প্রকাশের পর থেকে তিনি একের পর এক অভিযোগ করে এসেছেন। সেই অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে এ বার নির্বাচন কমিশনে নালিশ ঠুকল তৃণমূল কংগ্রেস।
ভোটারদের ভয় দেখানো, ভোটারদের প্রভাবিত করতে টাকা বিলি, বহিরাগত দুষ্কৃতিদের ভাড়া করে বহরমপুরে রাখা-সহ একাধিক অভিযোগ তুলে অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার ব্যাপারে বৃহস্পতিবার লিখিত আর্জি জানান জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ আলি। মহম্মদ আলি বলছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হচ্ছে। তাই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে যা প্রয়োজন সেটাই আমরা কমিশনকে জানিয়েছি।’’
পাল্টা অধীর চৌধুরী বলছেন, ‘‘ওরা রাজনৈতিক লড়াইয়ে হেরে গিয়ে ব্যক্তিগত কুৎসা করতে শুরু করে। কিন্তু বহরমপুরের মানুষ সে কথা বিশ্বাস না করায় হতাশা থেকে এখন মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।’’ তাঁর দাবি, সবাই জানেন আমাদের সঙ্গে জনগণ আর তৃণমূলের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসন, গুণ্ডা ও কোটি কোটি টাকা রয়েছে। একই সুরে বহরমপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘হার নিশ্চিত জেনে এখন অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে। ওরা পঞ্চায়েতে কী করেছে তা বাংলার মানুষ জানেন।’’ মহম্মদ আলি বলছেন, ‘‘অভিযোগ জানানোর সঙ্গে যদি হারের সম্পর্ক থাকে, তাহলে কংগ্রেসের হার নিশ্চিত। কারণ ওরাই সব চেয়ে বেশি অভিযোগ করেছেন।’’
এ বারের লোকসভা ভোটে অধীর চৌধুরীকে হারাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বহরমপুর কেন্দ্রে তিনটি সভা করেছেন। দলের মুর্শিদাবাদের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও রাজ্য নেতৃত্ব বহরমপুর কোন্দ্রের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সভা করছেন। বিভিন্ন সভা থেকে অধীরের সঙ্গে আরএসএস যোগের প্রসঙ্গ যেমন তুলেছেন, তেমনি অধীরের পুরনো খুনের মামলার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। এ ছাড়াও ভোটারদের প্রভাবিত করতে আমদানি করা হয়েছে টলিউডের বিভিন্ন তারকাকে। এ বারে অধীরের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাল তৃণমূল। অধীরের বিরুদ্ধে ২০টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে।
যদিও অধীর মনোনয়ন দাখিলের সময় হলফনামায় জানিয়েছেন তাঁর বিরুদ্ধে ৭টি ফৌজদারি মামলা বিচারাধীন। অধীর জানান, কমিশনে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করতে চাইছে ওরা।