অর্জুন সিংহ।—ফাইল চিত্র।
তৃণমূলে অর্জুন-কান্ড আরও গড়াল। ব্যারাকপুরে লোকসভার প্রার্থী হতে না পেরে ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহ মঙ্গলবার থেকেই প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানাচ্ছিলেন। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ বৈঠকও হয়। মমতা তাঁকে ঝাড়খন্ডে তৃণমূল প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নিতে বলেন। তবু তাঁর ক্ষোভ মেটেনি। বুধবার রাতে তিনি দিল্লি গিয়েছেন। লক্ষ্য বিজেপি শিবির।
দলের কয়েকজন যে তলায় তলায় বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে মঙ্গলবার প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সময় মমতা তার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। বুধবার আরও একধাপ এগিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দু’একজনের প্রার্থী হওয়ার লোভ আছে। যারা যেতে চায়, তারা গেলে তো বেঁচে যাই। কে গেল, ওরা কাকে নিল তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি অনেককে বলে দিয়েছি, যা। মুক্ত করে দিচ্ছি। টাকা নিয়ে যারা দল ভাঙায় তাদের নিন্দা করি।’’
এক সময় তৃণমূলে যে মুকুল রায়ের সঙ্গে অর্জুনের সম্পর্ক ছিল কার্যত অহি-নকুল, এখন বিজেপিতে যাওয়া সেই মুকুলের সঙ্গে বুধবার তাঁর টেলিফোনে দীর্ঘ কথা হয়। ফোন করেছিলেন অর্জুনই। কথপোকথনের অডিও ক্লিপ আনন্দবাজারের হাতে আছে। যদিও তার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু আপাতভাবে শুনলে কন্ঠস্বর দুটি যে অর্জুন এবং মুকুলের তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। অর্জুনের অবশ্য দাবি এ গলা তাঁর নয়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
অডিও ক্লিপ অনুযায়ী ‘মুকুল’ টেলিফোনে ‘অর্জুন’কে বলছেন, তিনি ব্যারাকপুর থেকে দাঁড়ালে সিপিএম, কংগ্রেস সবার ভোট জোগাড় করে শুধু বীজপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই ‘অর্জুন’কে তিনি কমপক্ষে ৫০ হাজার ভোটে এগিয়ে রাখতে পারবেন। উল্লেখ্য এখন বীজপুরে মুকুলের ছেলে শুভ্রাংশু তৃণমূলের বিধায়ক। ওই ফোনের কথোপকথন থেকেই জানা যায়, ‘অর্জুন’ বুধবার রাতে দিল্লি পৌঁছচ্ছেন।
এরকমটা যে হতে চলেছে তেমন ইঙ্গিত তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে ছিল। তাই এদিন মমতার কাছে যাওয়ার পরে তিনি সরাসরি অর্জুনকেও ক্ষোভের সঙ্গে বলে দেন, ‘‘তোকে মুক্ত করে দিলাম।’’ এরপরে ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে অর্জুন দু’এক মিনিট কথা বলেন। কিন্তু নিজের অবস্থান থেকে সরেননি।
এদিন দলের আর এক টিকিট প্রার্থী বালুরঘাটের বিপ্লব মিত্র এসেছিলেন কালীঘাটে। তাঁর সঙ্গে কথা বলার পরে এদিন রাতে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, বিষয়টি মিটে গেছে। বিপ্লব দলের নির্দেশ মতোই কাজ করবেন। বিপ্লবও বলেন, ‘‘যতক্ষণ জেলা সভাপতি আছি নেত্রীর নির্দেশেই কাজ করব।’’