জামুড়িয়ায় তৃণমূলের কর্মিসভায় দলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন ও তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন।
কোন্দল ভুলে সকলকে এক জোট হয়ে দলের কাজ করার বার্তা দিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন। সেই সঙ্গে ২০১৪-র হার থেকে ‘শিক্ষা’ নেওয়ার কথাও জানালেন জেলা সভাপতি। তিনি মঙ্গলবার জামুড়িয়ার এক কর্মিসভায় ওই মন্তব্য করেন।
এ দিন নজরুল শতবার্ষিকী ভবনে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেনের উপস্থিতিতে কর্মিসভাটি হয়। সেখানেই ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছেড়ে সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। ২০১৪-র লোকসভায় এবং ২০১৬-র বিধানসভায় জামুড়িয়ায় আমরা হেরেছি। এর থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা পুরসভা ও পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছি।’’ এলাকার ‘উন্নয়নে’র জন্যই এই কেন্দ্র থেকে ‘বিরাট জয়ের লক্ষ্য’ নেওয়ার কথা বলেন ভি শিবদাসন। সেই সঙ্গে প্রার্থীর নিদান, ‘‘তোমরা সকল কর্মী নিদেনপক্ষে ১০ জন করে ভোটারকে প্রভাবিত করো। তা হলেই আমাদের জয় নিশ্চিত হবে।’’ সেই সঙ্গে মুনমুন তাঁর গত লোকসভা কেন্দ্র বাঁকুড়ায় উন্নয়ন করেছেন বলে দাবি করেন।
ঘটনাচক্রে অতীতের নানা নির্বাচনের নিরিখে জামুড়িয়া বরাবরই বিরোধীদের শক্ত ঘাঁটি। জামুড়িয়া ১ ব্লকে পুরসভায় ১৩টি ওয়ার্ড রয়েছে। এর মধ্যে তৃণমূল ও সিপিএমের দখলে যথাক্রমে ১১টি ও দু’টি ওয়ার্ড। ১৯৭৭ থেকে ২০১৬, টানা এই এলাকায় সিপিএমের বিধায়ক। ২০১৪-র লোকসভা ভোটেও জামুড়িয়া বিধানসভা কেন্দ্রে সামান্য ভোটে হলেও এগিয়ে ছিলেন সিপিএম প্রার্থী। যদিও পঞ্চায়েত ভোটে জামুড়িয়ার সর্বত্র ছিল তৃণমূলময়। গত কয়েক বছরে তাঁদেরও দলীয় সংগঠন জামুড়িয়ায় বেড়েছে বলে দাবি বিজেপি নেতৃত্বের।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
জেলা সভাপতি ও প্রার্থীর এমন মন্তব্যের পরে ‘উন্নয়ন’ নিয়েই পাল্টা বিঁধেছেন বিরোধীরা। সিপিএম নেতা মনোজ দত্তের দাবি, ‘‘এই কেন্দ্রে এ বারেও তৃণমূলের হার নিশ্চিত। আসানসোল পুরসভার সঙ্গে জামুড়িয়ার সংযুক্তির পরে এখানে উন্নয়ন হয়নি। তাই এখানে এ সব কথা বলে কোনও লাভ নেই। ওঁদের নেতার কথাতেই স্পষ্ট, গোষ্ঠীকোন্দলকে তৃণমূল ভয় পাচ্ছে।’’ সেই সঙ্গে গত পুরসভা ও পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ব্যাপক সন্ত্রাস চালানোরও অভিযোগ করেন মনোজবাবু। যদিও সন্ত্রাস ও অনুন্নয়নের অভিযোগ অস্বীকার করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইও বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে তৃণমূল জামুড়িয়া-সহ জেলা ও রাজ্যের কোথাও কোনও কাজ করেনি। এখন ভোটের মুখে উন্নয়নের কথা বলতে হচ্ছে। মানুষ আমাদের পক্ষে আছেন।’’
এ দিন প্রার্থী মঞ্চে আসতেই কর্মীদের মধ্যে প্রার্থীর সঙ্গে নিজস্বী তোলার ধুম পড়ে যায়। এর জেরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিও তৈরি হয়। তৃণমূল সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে প্রায় ১৫ মিনিট সভার কাজ শুরুও করা যায়নি। এর পরে জেলা সভাপতির আর্জিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।