অজয় নায়েক
শনিবার বিকেলে রাজ্যের এখনকার পরিস্থিতি ১০-১৫ বছর আগের বিহারের সঙ্গে তুলনা করে তৃতীয় দফা ভোটে ৯২ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার কথা জানালেন নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক। আর রাতেই নির্বাচন সদনে চিঠি দিয়ে তাঁর অপসারণ দাবি করল তৃণমূল।
এ দিন বিকেলে রাজ্যের সিইও আরিজ আফতাবকে পাশে বসিয়ে বিশেষ পর্যবেক্ষক বলেন, ‘‘১০ বছর আগে বিহারে যে পরিস্থিতি ছিল, তা এখন এ রাজ্যে রয়েছে। সেই সময় এত সংখ্যক বাহিনী বিহারের ভোটে ব্যবহার করতে হত। যা এখন করতে হচ্ছে এ রাজ্যে। বিহারে এখন খুব কম এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করতে হয়।’’ কিন্তু কী ভাবে বিহারে এই পরিবর্তন সম্ভব হল? উত্তরে অজয় বলেন, ‘‘সেখানকার সাধারণ মানুষ এবং রাজনৈতিক দলগুলি মিলিত ভাবে পরিস্থিতির বদল ঘটিয়েছে।’’
কমিশন সূত্রের ধারণা, ভোট যত এগোবে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা আরও বাড়বে। পরবর্তী দফাগুলিতে ১০০% বুথে বাহিনী ব্যবহার হতে পারে। কিন্তু এত সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী কেন? নায়েকের জবাব, ‘‘মানুষ মনে করেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব।’’
তৃণমূল অবশ্য একে রাজ্যের অপমান হিসেবেই দেখছে। কেন এত বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করা হচ্ছে সেই প্রশ্ন তুলে কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী। তাতে অজয় নায়েকের রাজনৈতিক আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি দাবি করা হয়েছে, তাঁর নিয়োগই আইনসঙ্গত নয়। ফলে অবিলম্বে তাঁকে ফিরিয়ে নেওয়া হোক।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ও তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘উনি কী করে বাংলার ৯২% বুথে আধা সামরিক বাহিনী আনার কথা বলছেন! এটা তো বাংলা ও বাংলার মানুষের জন্য বড় অপমান। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাইব, কেন বেছে বেছে বিরোধী রাজ্যগুলিতে বেশি আধা সেনা পাঠানো হচ্ছে? গুজরাতে তো হচ্ছে না! এই ধরনের সিদ্ধান্তেই নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়।’’
প্রশাসনিক মহলের একটি অংশ এ-ও মনে করছেন, নায়েকের এই মন্তব্যের অর্থ, রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশের উপর ভরসা করছে না কমিশন।
এ দিন সন্ধ্যায় সিইও দফতর থেকে বেরনোর সময় নিজের আগের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বিশেষ পর্যবেক্ষক বলেন, ‘‘এ রাজ্যের পরিস্থিতিও ইতিবাচক ভাবে বদলাচ্ছে। নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা এবং পরিচালনার দিক থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আমি নিশ্চিত, পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনে এত সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাতে হবে না। ৯২ শতাংশের বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়ন সব রাজনৈতিক দলকে আশ্বস্ত করবে। আগামী দফাগুলিতে কোনও সমস্যা হবে না বলেই আশা করি। বিশেষ করে দ্বিতীয় দফার ভোটের পরে বলা যায়, পরিস্থিতি অনেক নিয়ন্ত্রণে।’’