ভোট দিতে পেরেছি, এটাই বড় কথা

আশঙ্কাটা তৈরি হয়েছিল গত বছরের পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই। বিরোধীরা বহু জায়গায় মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। ভোট দিতে পারেননি বহু মানুষ।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস ও সুজাউদ্দিন

বহরমপুর ও ডোমকল শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:২৩
Share:

মঙ্গলবার হরিহরপাড়ার একটি বুথে। ছবি: সঞ্জীব প্রামাণিক

আশঙ্কা মিথ্যে হলে কার না ভাল লাগে!

Advertisement

জেলা প্রশাসনের কর্তারা ভোটারদের অভয় দিতে গিয়েছেন। সেখানে গিয়ে তাঁদের শুনতে হয়েছে, ‘‘এ বারেও সেই পঞ্চায়েত ভোটের মতো হবে না তো?’’

নেতা-নেত্রীরা ভোট চাইতে বেরিয়েছেন। তাঁদেরও শুনতে হয়েছে, ‘‘ভোট দেওয়ার ইচ্ছে তো আছে ষোলো আনা। কিন্তু ভোটটা আদৌ দিতে পারব তো?’’

Advertisement

আশঙ্কাটা তৈরি হয়েছিল গত বছরের পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই। বিরোধীরা বহু জায়গায় মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। ভোট দিতে পারেননি বহু মানুষ।

মঙ্গলবার ভোট ছিল মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রে। এ দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ওই দুই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে যথাক্রমে ৮২.৩৮ শতাংশ ও ৭৮.৫৮ শতাংশ। কংগ্রেস ও সিপিএম বেশ কিছু বুথে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তুলে সেখানে পুনর্নির্বাচনেরও দাবি তুলেছেন। তবে ওই দুই লোকসভা কেন্দ্রের বহু ভোটারের দাবি, ‘‘পঞ্চায়েতের অভিজ্ঞতা এখনও দগদগে। ভাবতেই পারিনি এ বার অবাধে ভোট দিতে পারব। ভোট দিতে পেরেছি। সবথেকে বড় কথা এটাই।’’

এ দিন নিয়াল্লিশপাড়া, লালবাগ কিংবা ডোমকলের চায়ের দোকানে ভোট পরবর্তী চর্চার বিষয় ছিল এটাই। নিয়াল্লিশপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে ভোট দেওয়ার পরে চায়ের দোকানে বসে অজিত দাস বলছিলেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এখানে ভোট হয়নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। এ বারে ভোট হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে ছিলাম। কিন্তু বুথে গিয়ে দেখি, সবাই নিজের ভোট নিজে দিতে পেরেছেন।’’

রাধারঘাট উত্তরপাড়া জিএসএফপি বিদ্যালয়ে তিনটি বুথ রয়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই এলাকায় ভোট হয়নি। এ বারে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাহারায় সেখানে ভোট হয়েছে। ওই বুথ থেকে কিছুটা দূরে রাস্তার পাশে সিপিএম এবং তৃণমূলের কর্মীদের পাশাপাশি বুথ ক্যাম্প করে ভোটারদের স্লিপ বিলি করতে দেখা গিয়েছে।

ডোমকলের ধুলাউড়ির ফজলুর রহমান পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি। এ দিন ফজলুর বলছেন, ‘‘গত পঞ্চায়েতে আমি নিজেও

ভোট দিতে পারিনি। এ বারে কোনও বাধা ছাড়াই ভোটটা অন্তত দিতে পেরেছি।’’

ডোমকলের একটি চায়ের দোকানে এক যুবক গম্ভীর গলায় সবে বলতে শুরু করেছিলেন, ‘‘আসলে এ বারে কেন্দ্রীয় বাহিনী...।’’ তাঁকে কথা শেষ করতে না দিয়েই পাশের এক প্রৌঢ় বললেন, ‘‘রাখো বাপু তোমার কেন্দ্রীয় বাহিনী! যারা গন্ডগোল করার তারাই তো সব হাজার ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। মূল কথা এটাই!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন