আসানসোলে প্রার্থী কেন, জল্পনা মুনমুনকে নিয়ে

এক জায়গায় দরকার ছিল ‘গোষ্ঠী কোন্দল’ সামলানো। অন্যত্র প্রয়োজন ছিল ‘ঘোরতর রাজনৈতিক’ প্রার্থীর।

Advertisement

সুশান্ত বণিক ও রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

আসানসোল ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯ ০৩:২৭
Share:

এক জায়গায় দরকার ছিল ‘গোষ্ঠী কোন্দল’ সামলানো। অন্যত্র প্রয়োজন ছিল ‘ঘোরতর রাজনৈতিক’ প্রার্থীর।

Advertisement

মঙ্গলবার বিদায়ী সাংসদ মুনমুন সেনকে বাঁকুড়ার বদলে আসানসোল কেন্দ্রে প্রার্থী করার পিছনে (বাঁকুড়ায় তৃণমূলের প্রার্থী রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়) এই জোড়া কারণের কথাই ঘুরছে বাঁকুড়া ও পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূলের অন্দরে।

২০১৪-র লোকসভা ভোটে মুনমুন সেন সিপিএমের বাসুদেব আচারিয়াকে হারান। কিন্তু ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে মুনমুনের লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সব এলাকায় প্রত্যাশিত ফল হয়নি তৃণমূলের। পঞ্চায়েত ভোটেও দক্ষিণ বাঁকুড়ায় শক্তি বাড়ানোর প্রমাণ রেখেছে বিজেপি। পরিস্থিতির পিছনে গোষ্ঠী-কোন্দল, নিয়মিত সাংসদের দেখা ‘না পাওয়া’র মতো বিষয়গুলিই প্রধান বলে তৃণমূল সূত্রের দাবি।

Advertisement

তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলার একাধিক নেতার বক্তব্য, ‘‘উনি (মুনমুন) প্রার্থী হলে দলের সবাই ভোটে সক্রিয় হতেন কি না, সংশয় ছিল। পরিস্থিতি সামলাতে দরকার ছিল, রাজনীতিতে পোড়খাওয়া কোনও প্রার্থীকে।’’ সুব্রত মুখোপাধ্যায় তেমনই এক জন, দাবি ওই নেতাদের। তা ছাড়া, সুব্রতবাবু এর আগেও বাঁকুড়া থেকে লোকসভা ভোটে লড়েছেন। তবে জেতেননি।

তা বলে বাঁকুড়া থেকে মুনমুন সেনকে তৃণমূলের হারা আসন আসানসোলে পাঠানো হল কেন?

আরও পড়ুন: মহিলা প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ালেন মমতা, তালিকায় রয়েছে চার নতুন মুখ

তৃণমূল অন্দরের খবর, গত লোকসভা ভোটে আসানসোল কেন্দ্রে দোলা সেনের পরাজয়ের অন্যতম কারণ ছিল ‘গোষ্ঠী-কোন্দল’। এ বারেও সেখানে অন্তত চারটি গোষ্ঠীর অস্তিত্ব দলের রাজ্য নেতৃত্বকে চিন্তায় রেখেছে। প্রার্থীবাছাই সংক্রান্ত বৈঠকেও ‘কোন্দলের’ বিষয়টি সামনে আসে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। সেই ‘দ্বন্দ্বের’ জেরে আসানসোলে ফের যাতে প্রতিপক্ষ সুবিধা না পায়, তা মাথায় রেখেই মুনমুনকে প্রার্থী করা হল বলে মনে করছেন তৃণমূলকর্মীদের একাংশ। তাঁদের মতে, মুনমুনকে আসানসোলে আনার প্রধান সুবিধা দু’টি। প্রথমত, নতুন প্রার্থীকে জেতাতে সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। তাতে ‘দলীয় কোন্দলে’ প্রলেপ দেওয়া যাবে। দ্বিতীয়ত, মুনমুনের তারকা-ভাবমূর্তির দৌলতে ওই আসনে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থীকে টক্কর দেওয়াতেও সুবিধা হবে।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

যদিও দলের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানেননি তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন। তাঁর কথায়, ‘‘সবাই এক সঙ্গে লড়ব।’’ পক্ষান্তরে, বিজেপি সরকারি ভাবে প্রার্থী ঘোষণা না করলেও আসানসোলের বিদায়ী সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় টুইট করেন, ‘মমতাজি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) আমাকে আসানসোলের ভোটে সব সময় ‘সেন-সেশন্যাল’ প্রতিদ্বন্দ্বী উপহার দেন। ২০১৪-য় দোলা সেন। ২০১৯-এ মুনমুন সেন’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন