পরেশচন্দ্র দাস। —নিজস্ব চিত্র
ভোটের দিন ঘোষণার দশ দিন পরে বর্ধমানের একটি কেন্দ্রে প্রার্থী দিল বিজেপি। বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত আসনে দাঁড়াচ্ছেন প্রাক্তন আইএএস অফিসার পরেশচন্দ্র দাস।
দিল্লির বাসিন্দা হলেও পরেশবাবুর জন্ম মঙ্গলকোটের কৈচর গ্রামে। এখনও তাঁর মা আশালতাদেবী, চার ভাই ও তাঁদের পরিবার থাকেন সেখানে। বছর ষাটের পরেশবাবুর পড়াশোনা মাথরুন নবীনচন্দ্র বিদ্যায়তনে। সেখান থেকে কাটোয়া কলেজে স্নাতক হয়ে সোজা পাড়ি দেন দিল্লি। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি-ইতিহাস নিয়ে স্নাতকোত্তর হন। পরে এমফিল করেন। ১৯৮৮ সালে আইএএস হন এই প্রার্থী।
পরেশবাবু জানান, পশ্চিমবঙ্গে পাঁচ বছর থাকার পরে দিল্লি চলে যান তিনি। সেখানেই বিভিন্ন দফতরের দায়িত্ব সামলেছেন এত দিন। মাঝে কিছু বছরের জন্যে দক্ষিণ আমেরিকায় একটি সংস্থায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্যে কেন্দ্র সরকার তাঁকে পাঠায়। ২০১৭ সালের নভেম্বরে সমাজবিজ্ঞান মন্ত্রকের দায়িত্বে থাকার সময় তিনি স্বেচ্ছ্বাবসর নেন। তার পরেই যোগাযোগ বিজেপির সঙ্গে। গত বছর কালনায় দলের পশ্চিমবঙ্গের জেলা সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগও দেন তিনি। পরেশবাবুর দাবি, “গত দেড় বছর ধরে আমি বর্ধমান পূর্ব লোকসভার নানা সংগঠনের (মূলত আরএসএস) সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাদের কাজে প্রচুর গ্রামে ঘুরেছি। আমার হাত ধরেই কৈচরে ওই সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়েছে।’’ আজ, শনিবার রাজ্যে আসার কথা তাঁরা।
কিন্তু দলে যোগ দেওয়ার দু’বছরের মধ্যেই প্রার্থী? পরেশবাবুর দাবি, “প্রশাসনিক কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। গ্রাম সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণাও রয়েছে। নিচু তলায় কী ভাবে কাজ করতে হয় জানি। এ সব বিবেচনা করেই দল বোধহয় আমাকে প্রার্থী করেছে।’’ তাঁর দাবি, প্রচারে এক দিকে নরেন্দ্র মোদী সরকারের উন্নয়ন, অন্য দিকে, গ্রামে গ্রামে শান্তির কথা বলবেন তিনি। তবে কোনও ভাবেই কোনও আমলের সন্ত্রাস নিয়ে কথা বলবেন না। দলের একটি সূত্রের দাবি, পরেশবাবু আরএসএস-এর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। ওই সংগঠন থেকেই তাঁর নাম বিজেপির কেন্দ্রীয় দফতরে প্রস্তাব করা হয়।। এ ছাড়া দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ থেকে অনেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগও রয়েছে তাঁর। ফলে নাম নিয়ে বিশেষ আপত্তি ওঠেনি। বিজেপির দাবি, বর্তমানে রাজনাথ সিংহের পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ছিলেন পরেশবাবু।
এই লোকসভার দায়িত্বে থাকা বিজেপি নেতা কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, “দুর্দান্ত প্রার্থী বেছেছে দল। সবাই মিলে তাঁকে জেতানোর জন্যে ঝাঁপিয়ে পড়ব।’’ তৃণমূল প্রার্থী সুনীল মণ্ডলের অবশ্য দাবি, “কে প্রার্থী হল সেটা বড় ব্যাপার নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে সামনে রেখেই মানুষ আমাদের ভোট দেবেন।’’