লোহাপুর থেকে শুরু সিপিএমের পদযাত্রা, গন্তব্য সিউড়ি

প্রতিবাদ জানাতে জেলায় লং মার্চ

রাজ্য জুড়ে সিপিএমের ‘অধিকার যাত্রা’র অঙ্গ হিসাবেই এই কর্মসূচি। ‘লং মার্চ’ শুরু হওয়ার আগে দেওয়ালে দেওয়ালে তো বটেই, পাল্লা দিয়ে প্রচার চলেছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। অবশেষে শুরু হল তা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮ ০১:২৯
Share:

গণদাবি: ‘লং মার্চ’ কর্মসূচিতে সিপিএমের নেতা-কর্মীরা। রবিবার লোহাপুরের কাছে। নিজস্ব চিত্র

‘জাগো-জাগাও-এগোও’ স্লোগান তুলে রবিবার বীরভূমে তাদের পূর্ব ঘোষিত ‘লং মার্চ’ কর্মসূচি শুরু করল সিপিএম। প্রখর রোদেই সিপিএম এবং তার শাখা সংগঠনের ছশোর বেশি কর্মী এ দিন সকালে নলহাটি থানার লোহাপুর কাঁটাগড়িয়া মোড় থেকে পদযাত্রায় শামিল হন। মিছিল পৌঁছবে সিউড়িতে। আজ, সোমবার রাজনগর, দুবরাজপুর, কোটাসুর— এই তিনটি জায়গা থেকে ‘লং মার্চ’ কর্মসূচিতে যোগ দেবেন সিপিএম কর্মীরা।

Advertisement

রাজ্য জুড়ে সিপিএমের ‘অধিকার যাত্রা’র অঙ্গ হিসাবেই এই কর্মসূচি। ‘লং মার্চ’ শুরু হওয়ার আগে দেওয়ালে দেওয়ালে তো বটেই, পাল্লা দিয়ে প্রচার চলেছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। অবশেষে শুরু হল তা। সিপিএম নেতৃত্বের দাবি ছিল, রাজ্যে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে শাসক দল বীরভূম জেলাকে ‘মডেল’ হিসেবে তৈরি করেছে। তাই বীরভূম থেকেই শাসকের বিরুদ্ধে প্রত্যাঘাত শুরু হবে। এ দিন কাঁটাগড়িয়া মোড় থেকে সিউড়ি, এই দীর্ঘ ৮৪ কিলোমিটার ‘লং মার্চ’ শুরুর আগে একটি জনসভা হয়। তাতে ‘লং মার্চ’ কর্মসূচি নিয়ে বক্তব্য পেশ করেন দলের নেতারা। পরে সারা ভারত কৃষক সভার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য হান্নান মোল্লা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, পদযাত্রায় যোগদানকারীরা রামপুরহাটে রাত্রিবাস করে সোমবার সকালে সিউড়ির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন। এ দিন পদযাত্রায় দলের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্ম-সহ সিপিএমের গণ সংগঠনের নেতা এবং সদস্যেরা ছিলেন। মনসা হাঁসদা বলেন, ‘‘রাজ্যে সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতির সঙ্গে স্বৈরাচার, প্রতারণা এবং ভ্রষ্টাচার বিপদ আকারে দেখা দিয়েছে। বিপদ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য প্রতিবাদ না করাটা অপরাধ। সেই কারণে বীরভূমে ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর লং মার্চ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি জানান, এই কর্মসূচিতে সিপিএমের শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর, মহিলা, যুব ও ছাত্র সংগঠন থাকছে। জেলার ৩০২১টি বুথের প্রতিটি থেকে এক জন করে বুথ কর্মী যোগ দিচ্ছেন। কর্মসূচি শেষে ২ অক্টোবর সিউড়ি জেলা স্কুল মাঠে প্রকাশ্য সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রধান বক্তা সূর্যকান্ত মিশ্র। কর্মসূচির প্রস্তুতি হিসাবে জেলার বিভিন্ন স্থানে ২৩টি জনসভা, ১৮–২২ সেপ্টেম্বর ব্লক ভিত্তিক কনভেনশন, ১০-২০ সেপ্টেম্বর বুথ ভিত্তিক পদযাত্রা ও পোস্টার প্রদর্শনী, পথ নাটক হয়েছে। সিপিএমের দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে— বোলপুরের শিবপুর মৌজার মতো দুবরাপুরের চিনপাইয়ে বারুদ কারখানা, রাজনগরে সিসল ফার্ম, আমোদপুর চিনিকল সরকার অধিগৃহীত শিল্পতালুকে গড়ে তোলা। মহম্মদবাজারে কয়লাশিল্প গড়ে তুলতেও সরকারকে সদর্থক পদক্ষেপ করার দাবি রয়েছে। সঞ্জীববাবু জানান, জেলার পাথর শিল্পাঞ্চল থেকে শাসক দলের সমর্থকদের তোলাবাজি বন্ধ করা, বালি মাফিয়ারাজ বন্ধ করার দাবিও জানানো হয়েছে। দাবি রয়েছে আবদারপুর, মুরারই, নলহাটি, রামপুরহাট, সাঁইথিয়ায় রেলের উড়ালপুল দ্রুত নির্মাণের। ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা সহ বিভিন্ন সরকারি ও পুরসভা এলাকায় বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি রুখতে সাধারন মানুষকে পথে নামার ডাক দিয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন