প্রেমের স্বাধীনতা
পার্কে, নদীর পাড়ে ওরা কি একটু বেশিই কাছ ঘেঁষে বসেছে? তুলে নাও! ওই যে হোটেলে ঢুকল যুগল, ওরা কি স্বামী-স্ত্রী? নয় বুঝি? তুলে নাও! পুলিশ কি পারে এ ভাবে তুলে নিতে? ক’দিন আগেই তো মুম্বইয়ের হোটেল থেকে চল্লিশ জোড়া যুগলকে তুলে আনা হয়েছিল। আপত্তি করায় থাপ্পড়ও কষানো হয়েছে। পারে পুলিশ এ সব করতে?
আইন বলছে
পারে না। সাবালক নরনারীর শরীরী ঘনিষ্ঠতা নিয়ে হেডমাস্টারির অধিকার কেউ পুলিশকে দেয়নি। তবু পুলিশের একাংশ যা করে: প্রকাশ্য জায়গায় বসা বা দাঁড়ানো যুগলকে ধরে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৪ ধারায় মামলা দেয়, যে ধারা শুধু প্রকাশ্যে অশ্লীল কাজ বা গান-ছড়া-কথা বলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আবার, হোটেলের ঘরে যুগলকে ধরে ‘ইমমরাল ট্র্যাফিক (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট’-এ মামলা রুজু করা হয়, যে আইন আসলে অবৈধ যৌন ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
দাওয়াই কী?
কেউ হেনস্থা করতে এলে নাম ও ক্রমিক নম্বর জেনে নিন। অফিসারদের নাম ও পদমর্যাদা, অধস্তনদের ক্রমিক নম্বর উর্দিতেই থাকার কথা। সেই উর্দিধারীকে বলুন, অযথা হেনস্থা করা হলে আপনিও পাল্টা অভিযোগ করতে পারেন। থানা সেই অভিযোগ নিতে না চাইলে ঊর্ধ্বতন অফিসারের কাছে জানাতে পারেন, রেজিস্ট্রি করে অভিযোগপত্র পাঠালেও পুলিশ নিতে বাধ্য। পুলিশের আনা অশ্লীলতা বা যৌন ব্যবসার অভিযোগ যদি আদালতে প্রমাণ না হয়, সংশ্লিষ্ট উর্দিধারীদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা যায়। বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া গায়ে হাত তোলার অধিকার পুলিশের নেই।
কথা একটাই। প্রেম করুন, কিন্তু এমন কোনও ‘ভুল’ করে বসবেন না, যাতে কেউ তার সুযোগ নিতে পারে!