চক্র বাঁচিয়ে রাখতেই নিম্ন মানের জাল নোট

বছরের পর বছর ধরে জাল নোটের কারবারে জড়িত মালদহের কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগর এলাকার বহু মানুষ যাতে অন্য পেশায় চলে না যায়, সেই জন্য নিম্নমানের জাল নোট তাদের হাতে তুলে দিচ্ছে চক্রের চাঁইরা। গত কয়েক মাসের ঘটনা খতিয়ে দেখে এই ধারণাই হয়েছে এনআইএ গোয়েন্দাদের।

Advertisement

সুরবেক বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৭ ০৩:১৮
Share:

বছরের পর বছর ধরে জাল নোটের কারবারে জড়িত মালদহের কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগর এলাকার বহু মানুষ যাতে অন্য পেশায় চলে না যায়, সেই জন্য নিম্নমানের জাল নোট তাদের হাতে তুলে দিচ্ছে চক্রের চাঁইরা। গত কয়েক মাসের ঘটনা খতিয়ে দেখে এই ধারণাই হয়েছে এনআইএ গোয়েন্দাদের।

Advertisement

গোয়েন্দাদের দাবি, পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার জাল নোট ছাপা হতো করাচির টাঁকশালে। সেটা হয়েছিল বেশ কয়েক বছরের প্রস্তুতির পর। ২০০৫ থেকে পুরোদমে আসত সেখানে ছাপা জাল নোট। কিন্তু নতুন ২০০০ টাকার যে জাল নোট এখন ধরা পড়ছে, তা একেবারেই মোটা কাগজে অফসেটে ছাপা। যে কেউ ধরতে পারবে তা।

তদন্তকারীরা বলছেন, পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল হওয়ার পর মালদহের কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগরের বহু গ্রামে হাহাকার শুরু হয়ে যায়। চাঁইপাড়া, চর চাঁইপাড়ার মতো কিছু গ্রামে গত এক যুগ ধরে জাল নোটের কারবার এক রকম কুটিরশিল্পে পরিণত। বহু পরিবারের মূল আয় এখান থেকে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী দুইশত বিঘি, মহদিপুর, চরি অনন্তপুরের মতো এলাকায় এমন অনেকেই আছে, যারা জাল নোটের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে কয়েক বছর জেল খেটে বেরোনোর পর ফের একই অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে। জাল নোটের কারবার বন্ধ হওয়া মানে এদের জীবন ও জীবিকার সঙ্কট। পরিবারের হাঁড়ি চড়বে না।

Advertisement

গোয়েন্দাদের পর্যবেক্ষণ, সেই জন্য যত দিন না টাঁকশালে ছাপা উন্নত মানের জাল নোট আসছে, নিম্ন মানের জাল নোটের চোরাচালানেই আপাতত তাদের ব্যস্ত রাখা হচ্ছে। এতে পুরনো চাঁইরাই সামিল। তাঁদের আশঙ্কা জাল নোটের চালান বন্ধ হলে অন্য কোনও জীবিকায় ভিড়ে যেতে পারে এই সব লোক।

গত ৬ মার্চ কালিয়াচকের মহদিপুর থেকে ২০০০ টাকার ১৯৫টি জাল নোট অর্থাৎ তিন লক্ষ ৯০ হাজার টাকা-সহ ফকিরুল শেখ ও হবিবুর রহমান মানে দুই যুবককে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ গ্রেফতার করে। জেরায় জানা যায়, ও পারে চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের এমন এক জন তাদের ওই জাল নোটগুলি দিয়েছে, যাকে দু’বছর ধরে পুলিশ খুঁজছে। আবার ধৃত দুই যুবকও জাল নোটের পুরনো কারবারি বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন